পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုကျိရ সর্বদা এ বাড়ীতে আসত যেত। স্বচক্ষে সে দেখেছে হীরেন। আর সন্ধ্যা কৃষ্ণেন্দু বলেছিল, “তাই নাকি ? তবে তো মুস্কিল!” মুস্কিল ? শুধু মুস্কিল ? কনকের এটা সহ্য হয় নি। “আমার বাড়ীতে এসব চলবে না। ঠাকুরপো । তুমি অন্য কোথাও যাও।” তারপর কৃষ্ণেন্দু যখন জেলে, একটি মেয়েকে জন্ম দিয়ে সন্ধ্যা মরে যায়। সন্ধ্যা কাছে থেকে যে বিকার সৃষ্টি করেছিল কনকের মনে, তার প্রতিক্রিয়া সুরু হয়েছিল সন্ধ্যা দূরে যাবার পর থেকেই। সন্ধ্যা মরে গেছে শুনে কনকের প্রায় মাথা খারাপ হবার উপক্রম হয়। একদিন জেলে দেখা করতে গিয়ে কঁদিতে কঁাদিতে কৃষ্ণেন্দুর কাছে সে স্বীকার করে আসে তার বজাতির কথা । কৃষ্ণেন্দুর মেয়েকেও একরকম ছিনিয়ে নিয়ে আসে তার দিদিমার কাছ থেকে । কনকের মাই টেনেই সে বড় হয়েছে। এখন তার বছর চারেক বয়স, সবাই পুতুল বলে ডাকে। কৃষ্ণেন্দুব চেহারা যেমন হোক, সন্ধ্যার রূপ দেখে চোখে পলক পড়ত না মানুষের, মনে হত সে বুঝি, মাখন দিয়ে গড়া পুতুল। মেয়েটাও অনেকটা মায়ের মত হয়েছে। সেদিন আকাশে মেঘের সঞ্চার হয়ে আছে বিকাল থেকে কিন্তু বৃষ্টি নামছে না। রাত সাড়ে এগারোটার সময় বাড়ী ফিরে কৃষ্ণেন্দু জামা খুলতে যাবে, উত্তেজনার একটা ঝাপটার মত হাজির হল মমতা । পাশের ঘরে কনকের কাছে বসেই সে এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল। তবু সে হঁপাচ্ছে। এটুকু আসার পরিশ্রমে অবশ্য নয়, উত্তেজনায়। ‘দাঁড়াও, বলছি। দাম নিয়ে নি ।” কৃষ্ণেন্দু আর জামা খুললে না। কৃষ্ণেন্দু অত্যন্ত লম্বা, যেরকম লম্বা হলে লোকে তালগাছ বলে থাকে। রোগ বলে তাকে আরও বেশী লম্বা দেখায়। রোগাও সে এক অদ্ভুত ধরনের,মোটা মোটা হাড় ছাড়া গায়ে তার কোথাও মাংস নেই। দেহের স্বাভাবিক গড়নটাই তার এইরকম, রোগে ভুগে মাংসের অপচয় ঘটে। রোগ হয়নি বলে এবং শরীরের সঙ্গে মানানসই ধাচের লম্বাটে মুখে শীর্ণতা চোখে পড়ে না বলে, জামা গায়ে থাকলে তাকে বিশেষ খারাপ দেখায় না, খালি গায়ে তাকে দেখায় হাড়গিলের মত । মানুষের সামনে এজন্য সহজে সে জামা খুলতে চায় না-এত যে সে তেজী, আত্মবিশ্বাসী, ন্যাকামি-অভিমান-বিরোধী মানুষ, এই একটি তুচ্ছ বিষয়ে দুর্বলতা সে জয় করতে পারেনি। গায়ে তার খানিকটা হাফ-পাঞ্জাবী ও খানিকটা ফতুয়ার SSV) (e) by