পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উকি দিয়ে যায়, বলে যে কৃষ্ণেন্দু খেয়ে নিলেই পারত, এ রকম আনিয়মে কদিন তার শরীর টিকবে। শেষে সে রীতিমত রাগ করেই বলে যায়, “বেশ, গল্প করে তোমরা সারারাত । আমি গিয়ে শুলাম ।” খিদেয় ঝিমিয়ে আসে ক্লষ্ণেন্দুর শ্ৰান্ত শরীর। সহানুভূতির বদলে বোধ করে বিরক্তি, জাগে একটা ভাষাহীন কঠিন প্ৰতিবাদ । মমতার সঙ্কটের বিবরণ সে শোনে সমালোচকের মত, দরদী বন্ধুর মত নয়। তার মনে হয়, মমতা যেন তাকেও জড়িয়ে ফেলতে চাইছে তার দাম্পত্য জীবনের দুর্ঘটনার সঙ্গে, দায়িত্ব আরোপ করতে চাইছে তার ঘাড়ে। মমতা তাকে সব বলছে সেইভাবে, নালিশ না করেও মানুষ যেভাবে দুর্ভাগ্যের জন্য নালিশের ভঙ্গিতেই ভগবানকে জানায়, আমার তো কোন দোষ নেই, তবে কেন এমন হল ভগবান ? ‘কেন তুমি অত ব্যস্ত হয়েছিলে কেষ্টদা ? কেন তুমি অত করে বলতে গিয়েছিলে ওর হয়ে ? আর কিছুদিন গেলে হয় তো। ওকে ঠিকমত চিনতে পারতাম ।” শুনে বড় রাগ হয় কৃষ্ণেন্দুর । মমতার নরম গালে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেবার জন্য হাতটা তার নিসপিস করে ওঠে। ফুটন্ত ক্রোধের “বুদবুদের মত কতগুলি গাল মনের মধ্যে ফুটে উঠে ফেটে যায়-বড়লোকের স্বার্থপর খেয়ালী হতভাগা নচ্ছার মেয়ে-ন্যাক মেয়ে । “তোমায় দোষ দিচ্ছিনা কেষ্টদ। আমিই ভুল করেছিলাম। আমি শুধু दलछि कि রম্ভাও বলেছিল। এরকম হিসাব করে নয়, গোড়াতে প্ৰাণের আবেগে উচ্ছসিত হয়ে-কার সঙ্গে বিয়ে দিলেন আমার ? নালিশ রম্ভাও করে নি, তাকে আত্মীয় ভেবে ওভাবে কথাটা বলেছিল, তার বিয়ের ব্যাপারে কোন সংস্রব ছিল না। এমন আপন জনের কাছেও সে ওভাবেই দুঃখ নিবেদনের ভূমিকা করত। মমতাও হয়তো নালিশ করছে না, দোষ দিচ্ছে না । নিজের দায়িত্বে এতবড় ভুল করার চিন্তাটা শুধু তার সইছে না। ভুল করার সমর্থনে যত পারে যুক্তি আবিষ্কার করে সে শুধু দায়িত্ববোধটা একটু হালকা করতে চায়। নিজের ওপর এবার বিরক্তি জাগে কৃষ্ণেন্দুর। দায়িত্ব আছে বৈকি। তার, নিজের ব্যক্তিত্বের প্রভাবকে সে কি কাজ করতে দেয়নি এদের হৃদয় মনের ওপর, যারা আকৃষ্ট হয়েছে তার দিকে, আপনি বলে জেনেছে তাকে, শ্ৰদ্ধা করতে শিখেছে তার বুদ্ধি Ο δ Οι ད།