পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဗုကျိဍ দাওয়ায় তাদের জন্য বসবার বিশেষ ব্যবস্থা করা ছিল। রম্ভ তাদের সিল্পী আর ফল এনে দিল । তারপর শুরু হল রামপালের গান ৷ রামপাল আজি স্বদেশী গান ধরেছে । কৃষ্ণেন্দু চেয়ে দেখল, হাসি আর গর্ব মুখে ফুটিয়ে রামপালের দিকে তাকিয়ে রম্ভ। গান শুনিছে । দুটি গানের পর কৃষ্ণেন্দু উঠে দাঁড়াল, বলল, “কাছেই একটা কাজ আছে, সেরে আসছি। এক্ষুণি ।” হীরেন। বড়ই অস্বস্তি বোধ করছিল। সে বলল, “চল, আমিও যাব।” দু'জনে যখন রাস্তায় পৌছল, অধিকাংশ গোরস্থ বাড়ী আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ভেতরের দিকে গলির ডাইনে বঁায়ে এবং দু’পাশের সরু সরু শাখাগলির মধ্যে নিম্নশ্রেণীর অনেক রূপজীবিনী বাস করে। এই বাড়ীগুলি এখনো পূরোদস্তুব সজাগ। মানুষের আসা যাওয়ার বিরাম এখনো হয় নি, গানবাজনা চেচামেচিতে খোলার ঘরগুলি হুল্লোড়িত হয়ে আছে । গলির মোড়ে পথের ধারে এবং বাড়ীর দুয়ারে দাড়িয়ে অনেক স্ত্রীলোক এখনো প্ৰতীক্ষা করছে। বেচাকেন। চলছে পান বিড়ি আর ডিম মাংসের দোকানে। পুলিশ মন্থর পদে হাঁটছে, টুংটং শব্দে রিক্স আনাগোনা করছে, মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক চোখে পড়ছে অনেক ! ‘এসব মেয়ের অনেকের স্বামী আছে জানিস হীরেন ? স্বামীপুত্র নিয়ে রীতিমত ঘর সংসার করে। স্বামীর উপাজনে চলে না, স্ত্রীও তাই এভাবে কিছু উপায় করে। সন্ধ্যার পর রাস্তায় এসে দাড়ায়, কেউ এলে দরদস্তুর ক’রে ঘরে নিয়ে যায়, স্বামী আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে কাছাকাছি কোথাও অপেক্ষা করে। হয়তো ঘরের সামনেই বারান্দায় বসে বিড়ি টানে, ছেলেমেয়ে সামলায়। ভাবতে পারিস, চোখের সামনে আরেকজন পুরুষ স্ত্রীকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করল ? “পারি। এরা তো অশিক্ষিত ছোটলোক, আমায় একজন নিজে ডেকে নিয়ে আদর করে ঘরে বসিয়ে স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিত, সে শিক্ষিত ভদ্রলোক, পাড়ায় মানসম্রম আছে, মোটামুটি উপজািনও আছে। বাপ মেয়েকে, ভাই বোনকে, স্বামী স্ত্রীকে ভাড়া দিয়ে টাকা রোজগার করে, সংসারে এটা তোর এই পাড়ায় প্ৰথম ঘটছে না ।” “ওসব ভদ্র পাষণ্ডের কথা বলি নি। এ পাড়ায় অশিক্ষিত ছোট লোকের মধ্যেও ওরকম মানুষ আছে। আমি যাদের কথা বলছি, তারা আলাদা জাতের Ο 8 Σ