পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုးချိရ খাবার যোগাড় করে রেখেছিল,-রুটি, তরকারী আর একটি করে গুড়ের সন্দেশ । পরিশ্রান্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষগুলি এই খাদ্য উদারস্থ করে যখন ঢকু ঢকা করে এক ঘটী জল খেল, স্পষ্ট অনুভব করা গেল তাদের উপস্থিতির প্রকৃতিই যেন বদলে গেছে। অধীর উত্তেজনাপ্ৰবণ মানুষগুলি কয়েক মিনিটের মধ্যে হয়ে গেল ধীর ও শান্ত । এ বিষয়ে কৃষ্ণেন্দুর অভিজ্ঞতা আছে। সে জানে, পেট ঠাণ্ডা না করে মাথা ঠাণ্ড রেখে আলোচনা করার ক্ষমতা এদের হয় না । আলোচনার গোড়াতেই জানা গেল, ম’বুব আজিজদের সম্পর্কে কারখানার অন্য সকলের মনে এতটুকু বিরুদ্ধভাব নেই, অনেকদিন তারা একসঙ্গে কাজ করছে। প্ৰতিবাদ না করলেও ওদের প্রতি যে অন্যায় ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা তারা সমর্থন করে না । ক্ষমতা থাকলে প্ৰতিবাদ ও তারা করত । কৃষ্ণেন্দু বলল, “তই তোমাদের করতে হবে।” এদের মধ্যে দীননাথ সবচেয়ে বিচক্ষণ, মাথায় কঁচাপাকা চুল আর গায়ের ফতুয়াটীর জন্য তাকে আরও বিচক্ষণ দেখায়। হীরেনের দিকে এক নজর তাকিয়ে সে উদাসভাবে বলল, “আমরা কি করতে পারি বলুন ? ‘এরা সাতজন যা করে, তোমরাও তাই করবে। এদের একজনকে উমাপদ বাবু অপমান করলে বাকী ছ'জন গা পেতে নেয়, এবার থেকে তোমরা সবাই গা পেতে নেবে। দরকার হলে ওদের সঙ্গে তোমরাও বেরিয়ে আসবে কাজ ছেড়ে দিয়ে ।” কেউ কথা বলে না। কৃষ্ণেন্দুর কথা শুনতে শুনতে বার বার সকলের দৃষ্টি পড়তে থাকে হীরেনের ওপর। এই সভায় হীরেনের উপস্থিতি তাদের কাছে ধাধার মত হয়ে উঠেছে , সকলেই দারুণ অস্বস্তি বোধ করছে ; প্ৰথমে সকলে ভেবেছিল মধ্যস্থ হয়ে ব্যাপারটা মীমাংসা করে দেবার জন্য সে এসেছে, কর্তৃপক্ষ থেকে সে তাদের ভরসা দেবে যে ভবিষ্যতে কারখানার কারো প্ৰতি কোনরকম দুর্ব্যবহার করা হবে না । আপোষ আলোচনার পরিবর্তে যখন প্ৰতিকারের ব্যবস্থার কথা উঠল, হীরেনের সামনেই অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় উমাপদর সমালোচনা করে কৃষ্ণেন্দু যখন বুঝিয়ে দিতে লাগল, ওই একটি লোকের গোয়ার্তমির জন্যই বিশ্ৰী ব্যাপারটা স্বষ্টি হয়েছে এবং সে আর লোকনাথের একগুয়েমির জন্যই ব্যাপারটা মেটানো যাচ্ছে না, সকলে তখন এমন বিব্রত হয়ে পড়ল বলবার নয়। কারো কারো একথাও মনে হল যে এমনিভাবে বাপভাই-এর নিন্দা শুনিয়ে S