পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী শ্যামলাল। ওসব লোক ওইরকম হয়। বীরেশ্বর বেশীরকম বাড়াবাড়ি করেছিল। অতটা না করলেই হ’ত । ‘বাড়াবাড়ি হয়েছিল কিছুটাক।” কাশীশ্বর সায় দিল । “কিসের বাড়াবাড়ি ?” বাঝালো সুরে মোহনলাল জিজ্ঞেস করল। হ্যামলাল একবার তীব্র দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল,কোন জবাব দিল না। হুকোটা কাশীশ্বরের কাছে বেড়ায় ঠেস দিয়ে নামিয়ে রেখে উঠে একবার ঘরের ভেতর থেকে ঘুরে এল। না, হেরম্ব চক্রবর্তীকে পিতার হত্যাকারী বলে ধরে নিতে শ্যামলাল রাজী নয় । কার বন্দুক কোথা থেকে কে ছুড়েছিল না জেনে আন্দাজে একজনের ঘাড়ে দোষ চাপালেই তো হয় না। দোষ কর সঠিক জানা গেলে তাকে শাস্তি দেবার জন্য যথাসর্বস্ব ব্যয় করে পথের ভিখারী হতে সে রাজী আছে, জীবনটাই নয় দিয়ে সে বে। কিন্তু অন্ধকারে টিল। সে ছুড়বে কোনদিকে, কার দিকে ? “সে নব্য তো কে ছুইেডকে বন্দুক ?’ মোহনলাল মন্তব্য করল। শ্যামলাল মাথা নেড়ে বলল, “কে জানে কে ছুড়বে। শত্তর কি একটা ছিল, %ে,াকের পেছনে লাগ! রোগ ছিল ৰাবার।” সজোরে শ্যামলাল নিঃশ্বাস ফেলল । —“ভগবান আছেন। মোদের যে সর্বনাশ করেছে সে ধরা পড়বে । পুলিশ খোজ করছে।” 'পুলিশ ! পুলিশ ও ব্যাটার দলে |’ মোহনলাল এক একটা ছাড়া ছাড়া কাটা কাটা বাবালো মন্তব্য করে আর মুখ ঘুরিয়ে একদৃষ্টি তাকিয়ে থাকে অন্ধকার উঠানের দিকে। মনের জ্বালার "তাপে মুখ চোখের যে অবস্থা হয়েছে ছেলেটার, একশো পাচ ডিগ্রি জর হলে তেমন হয়। একটু উস্কে দেবার কেউ থাকলে যে কোন মুহুর্তে সে গিয়ে হেরম্বকে খুন করে আসতে পারে । জীবনলাল কম কথা কয় । সে বলল, “মোরা ও তলে তলে সাক্ষী প্ৰমাণ খুজিছি। কেষ্টবাবু এসে পড়লে শলা পরামর্শ মিলত। দাঙ্গার ব্যাপারটাতে মোদের জড়িয়ে দিলে মুঙ্গিল হয়ে যাবে।” শ্যামলাল যেন একটু জোর দিয়েই বলল, “মন করে যে তা জড়াবে না। অ্যাদিনে তবে টেনে লিয়ে যেত ।” দাঙ্গা হয়নি, বাধিবার উপক্রম শুধু হয়েছিল। মোট যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নাকি দাঙ্গা করার অভিযোগেই চালান দেওয়া হবে । ওরা እ ዓ 8