পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(၇ဓါးရ মিনিটখানেক আগে সে একগাল হাসি নিয়ে তাদের কামরায় উঠে দুজন যাত্রীর মধ্যেকার তিন ইঞ্চি ফাকিটুকু বসবার মত প্ৰশস্ত করার চেষ্টায় ব্যাপৃত হয়ে 6°व् | “টিকিট করেছিস ?” ‘ইস! টিকিট ! পিলেটফারম টিকিট কেটেছি একটা তাই ব্যাটাদের ভাগ্যি ।” ৱেল কোম্পানীকে ফাকি দেওয়ার কেকটা নরেশের চিরন্তন । পয়সা বঁাচানোটা অবশ্য তার আসল উদ্দেশ্য নয়, সর্বদা সতর্ক থাকতে আর এক দরজা দিয়ে চেকারকে উঠতে দেখে আরেক দরজা দিয়ে নেমে যেতে বড়ই তার মজা লাগে। তার মনের বাসনা কৃষ্ণেন্দুর জানা আছে। বিনা টিকিটে একদিন সে দেশদেশান্তর বেড়িয়ে আসবে,-দিল্লী বোম্বাই পুরী মাদ্রাজ সিমলা দাজিলিং, যেখানে যেদিকে যতদূর রেলগাড়ী যায়, বজবজ ডায়মণ্ডহারবার পর্যন্ত বাদ দেবে না । এরকম পাগলামি না থাকলে কি টেপিকে নিয়ে এ ছেলে পালাতে চায়। কিন্তু ঘরে বসে সর্বসম্মতিক্রমে টেপিকে পাওয়ার সুযোগ প্ৰত্যাখ্যান করে । টেপিকে সে চায় নি, চেয়েছিল টেপিকে নিয়ে শুধু পালাতে। পরে এটা বুঝতে পেরেছিল বলেই ওকে মারার ক্ষোভটা এত কড়া হয়ে উঠেছিল কৃষ্ণেন্দুর। বড় একটা স্টেশনে গাড়ি অনেকক্ষণ দাড়ায়, টিকিটও দেখা হয়। নীচে নেমে গাড়ী ছাড়া পৰ্যন্ত প্ল্যাটফর্মে পায়চারি করাই নিরাপদ ভেবে নরেশ উঠতে যাবে, কৃষ্ণেন্দু তাকে চেপে ধরে জোর করে বসিয়ে দিল। আলপাকার জীৰ্ণ মলিন কোটি গায়ে চেকারকে গাড়ীতে উঠতে দেখে নরেশ আরেকবার ব্যাকুলভাবে দাড়াবার চেষ্টা করল, কিন্তু কৃষ্ণেন্দুর এক হাতের জোরের সঙ্গেই বা সে পারবে কেন ! মৃদু হেসে মাথা নেড়ে কৃষ্ণেন্দু বলল, “পালালে চলবে না। বসে থাক।” হতভম্ব হয়ে নরেশ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। অল্পদিন আগে কৃষ্ণেন্দু তাকে মারতে মারতে প্ৰায় বেহুস করে দিয়েছিল, সে তো ভুলবার কথা নয়। আজ আবার তাকে নিয়ে সে কি নিষ্ঠুর খেলা খেলবার মতলব করেছে। অনুমান করবার ব্যাকুলতায় দৃষ্টি যেন তার সেঁটে রইল কৃষ্ণেন্দুর মুখে। চেকার কাছে এলে কৃষ্ণেন্দু তাকে ছেড়ে দিল। “আমরা তোমার টিকিটের দাম দিতে পারব না, নরেশ, চেয়ে না। কিন্তু । -গোড়ায় বললে টিকিট কিনে দিতাম, এখন একটি পয়সা দেব না।” S ፃ ፃ e(»R)