পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরেন বলল, “কেন বলিস ? ভাষা শুধু বকবক করার জন্য স্মৃষ্টি হয় নি, বোঝারও কাজে লাগে। নিজের মন যা বলে শুধু সেই কথা না বলে, যাদের জন্য বলা তারা যা জানে বোঝে আর মানে সে কথা বললেই হয় ! শ্রোতার ভাষা না জেনে বক্তৃতা দিয়ে লাভ কি ? অন্নহীন পরাধীন অত্যাচারিতের ধর্ম নেই বললে যখন কেউ কানে তোলে না। তখন বললেই হয় ওরকম হয়ে থাকা অধৰ্ম, মহাপাপ-বললেই হয়। অন্নাভাব, পরাধীনতা, অত্যাচারের প্রতিবাদ আর প্ৰতিকারই ধর্ম।” “তফাৎ কি হল ?” “যারা ধর্ম-খ্যাপা তারা বুঝতে পারে, সাড়া দেয়। এদেশে ধৰ্ম আর সংস্কারের সর্বব্যাপী প্ৰভাব যখন অস্বীকার করা যায় না, সে সত্যটাকে মেনে নিয়ে কাজে লাগানোই তো বুদ্ধিমানের লক্ষণ। কিন্তু তোদেব কথা আলাদা। ওসব কাজে লাগাতে তোদের সঙ্কোচ হয়। পাছে তার মানে দাড়ায় যে তোরা ও মেনে নিয়েছিস, প্রশ্ৰয় দিয়েছিস । স্বৰ্গে যেতে হবে, কিন্তু ফ্যাশনেবল পথটি ছাড়া অন্যপথে তোরা চলতে রাজী নোস।” কৃষ্ণেন্দু একটু হাসল। নীরবে কিছুক্ষণ পথ চলে বিনা ভূমিকায় হঠাৎ বলল, ‘দূরে দূরে না থেকে কাজে নেমে যা না হীরেন? আমার চেয়ে তুই ভাল কাজ করতে পারবি। আমার শুধু সখ, তোর দরদ আছে, ওদের তুই আমার চেয়ে ভাল বুঝিাস। “আমার সত্যি খিদে পেয়েছে ইন্দু।” নিঃশব্দে বাকী পথ অতিক্রম করে বাড়ীর সামনে পৌছে দু’জনে একসঙ্গে দাড়িয়ে পড়ে, যেন একই তাগিদে । “কাজে নামার ইচ্ছে তোর আছে। আমি জানি।” ‘তা আছে।’ “তবে ? ‘ইচ্ছে থাকলেই কি হয়। আমার সংযম নেই, সহিষ্ণুতা নেই, ধৈর্য নেই। কাজে নামতে ভয় করে ভাই ।” “আজ পর্যন্ত বার দশেক প্রশ্ন করেছি। আজ তবু একটা জবাব দিলি।’ বলে হীরেনকে ফেলে কৃষ্ণেন্দু হন হন করে বাড়ীর মধ্যে ঢুকে ८व् | Stre