পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী “এই এটা । আরও কয়েকজন আছে, তারা আসতে পারে নি।” গায়ের পনের ষোলটি কিশোর ও তরুণকে নিয়ে সজঘবদ্ধ করার সে এক বিচিত্র ও গৌরবময় কাহিনী । অনাথ আর সহদেবেরই গৌরব, তারাই দলটি। গড়েছে। আগে কিছুই ছিল না ঝুমুরিয়ায় ৷ নমো নমো করে একটিমাত্র বারোয়ারী পূজো হত, সভাসমিতি, খেলাধূলার ব্যবস্থা, লাইব্রেরী, নাইটস্কুল, কিছুই ছিল না। এরা সব কিছু গড়ে তুলেছে। বছরে এখন পাচ ছ'টি পূজা পার্বণ উপলক্ষে উৎসব হয়, দুর্গাপূজায় এত সমাবোহ হয় যে আশেপাশের সব গ্রাম হার মেনেছে । সদর থেকে বিখ্যাত ব্যক্তিদের আনিয়ে মাঝে মাঝে গায়ে এরা সভা করায় । হেরম্বের কাছ থেকে একটি খেলার মাঠ আদায় করেছে, তাদের টিম এবারে সদরে কাপ খেলায় প্রথম রাউণ্ডে জিতেছিল। পালা করে এরা পাহারা দেওয়ায় গাঁয়ে এখন আর চুরি হয় না। নাইট স্কুলে চাষাভূষাদের পড়ায়। অসুখ বিসুখে সেবা করতে যায়। জঙ্গল সাফ করে, মশা নষ্ট করে, আরও কত কি যে তারা করে হিসাব • হয় না । “আগে কিছুই ছিল রা কৃষ্ণেন্দু বাবু। সব আমবা করেছি।” দুঃখের বিষয়, মোহনলাল ও একটা দল করেছে, চাষাভুনে। ছেলেদের নিয়ে। কােজ তারা কিছুই করে না, অনাথদের দলের সঙ্গে শুধু শক্রিতা কবে আর তাদের টিটকারী দেয় । কৃষ্ণেন্দু বলল, “এই ব্যাপার ? তা, তোমাদের ভিলেজ পলিটিকস নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় আমার নেই ভাই। হেরম্ববাবু বড বাড়াবাড়ি আরম্ভ করেছেন, তার একটা বিহিত করতে আমি এসেছি। আমি কোন দলে নাই । তোমাদের দলেও নয়, মোহনলালের দলেও নয়। কাল কোন দলের প্রশেসন হবে না, গায়ের লোকের প্রতিবাদের প্রশেসন হবে। এতে দলাদলির কোন কথাই নেই। আশেপাশের গা থেকেও লোক আসবে । তোমরাও এসে ।” “আমাদের একটু অসুবিধা আছে।” “কিসের অসুবিধা ? “আমরা-আমাদের মতবাদ অন্যরকম।” কৃষ্ণেন্দু অসহিষ্ণু হয়ে বলল, “মতবাদ ? এর মধ্যে আবার মতবাদের কথা আসে কোখোঁকে ? একটা লোক যাচ্ছেতাই অত্যাচার করছে, ধরে বেঁধে সকলকে দিয়ে মজুরের কাজ করাচ্ছে, জমি কেড়ে নিয়ে রাস্তা বানাচ্ছে, মাটি তুলে >レクセー