পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিক গ্ৰন্থাবলী হীরেন হাল্কা সুরে বলল, “আমাদের জন্য ভাববেন না, গুলি খেয়ে মরলেও আমরা মরব না ।” “ওঁর। যদি কোন বিপদ হয় ? ওঁকে নিয়ে যদি টানাটানি করে ?” দিগম্বরী শশাঙ্কের জন্য ব্যাকুল হয়েছে, তার স্বামীর জন্য! তারা মরুক, গায়ের সকলকে ধরে পাকড়ে নিয়ে যাক, সেজন্য দিগম্বরীর অত ভাবনা নেই। শশাঙ্কর কিছু না হয়। হীরেনের মনটা ছাৎ করে উঠল। দিগম্বরী কলকাতার বাড়ীতে তাকে অনেক বিস্ময় দিয়েছে, কিন্তু সে সব যেন ছেলেখেলার ম্যাজিক দেখিয়ে ছোট ছেলেকে অবাক করা। এইবাব একেবারে তার অ্যাতে ঘা দিয়ে তাকে সে থ বানিয়ে ছেড়েছে । সে বলে, “শশাঙ্কদার বিপদ হবে কেন ? ওর সঙ্গে এ ব্যাপারের কি সম্পর্ক ?” দিগম্বরী বলে, “পুলিশ কি তা শুনবে ।” হীরেন সায় দিয়ে বলে, “তা শুনবে না! আমরা দু'টি নেতা যখন এ বাড়ীতে ?چS{tf ‘ওগো মা, কি হবে!’ দিগম্বরী ডুকরে কেঁদে ওঠে। এবার হীরেন যায় চটে । মনটা তার এমনিই সুস্থ ছিল না । ‘দেখুন বৌঠান, ন্যাকামি করবেন না । আমরা এদিকে দশ বিশ বছরের জন্য জেলে চলেছি, হয়তো প্ৰাণটাও যাবে, শশাঙ্কদার কি হবে না হবে তাই ভেবে এখন থেকে আপনি মূৰ্ছা যেতে বসলেন। শশাঙ্কদা শোভাযাত্রায় থাকবে না, যেতে চাইলেও ওকে আমরা নেব না, আপনার ভয় নেই। তবু যদি ওকে পুলিশে ধরে, ধরবে। বাড়ী বসে বসে একেবারে অপদাৰ্থ অমানুষ হয়ে গেছে, কিছুদিন জেল থেকে ঘুরে এলে হয়তো একটু মনুষ্যত্ব ফিরে পাবে।” ‘মুখ সামলে কথা কইবেন ঠাকুরপো!” দিগম্বরী ফোস করে ওঠে। অসহ্য ক্ৰোধে কিছুক্ষণ তীব্র দৃষ্টিতে হীরেনের দিকে চেয়ে থেকে যোগ দেয়, “আপনাদের তুলনায় উনি দেবতা, তা জানবেন ।” ‘গাঁজাখের ভিক্ষুক দেবতা।” “দুশ্চরিত্র তো নন ? বাজারে আর কুলিবস্তিতে মেয়ে চেখে বেড়ানোর চেয়ে গাজা খাওয়া ভিক্ষে করা ভাল।” দিগম্বরী গটগট করে ঘর থেকে SS7