পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী তাকে সে ভেবে রেখেছিল দীর্ঘ বলিষ্ঠ দেহ একগুয়ে বদরাগী একটা মানুষ হিসাবে, যে হাণ্টার হাতে ঘুরে বেড়ায় আর মদ খেয়ে যুবতী কুলি মেয়েকে টেনে হিচড়ে ঘরে নিয়ে যায়, পুলিশ যাকে খাতির করে, গ্রামশুদ্ধ লোক যার ভয়ে কঁপে --তার এমন মাঝবয়সী মুদী দোকানের মালিকের মত নিরীহ গোবেচারী চেহারা ! “হীরেনবাবু তো ? আমার নাম শ্ৰীহেরম্ব চক্রবর্তী। নমস্কার।’ নমস্কার ।” “আপনার চাকরের কাছে শুনলাম, মশায় নাকি বডড মুস্কিলে পড়ে গেছেন। তা সেটা আশ্চৰ্য কি ! আমনি হয় মশায়। থাকলে দু’ঢোক খেলাম তো খেলাম না খেলাম তো না খেলাম। কিন্তু না থাকলে তখন আলবৎ চাই ! কি বলেন ? श ! झ।' জোরালো কিন্তু ক্ষণিকের হাসি । ‘তা দয়া করে যদি এলেন, বাইরে দাড়িয়ে থাকবেন ? আসুন পায়ের ধুলো দিন গরীবের বাড়ীতে ।” হীরেন আমতা আমতা করে বলল, “আমি ভাবছিলাম একটা কি দুটো বোতল কিনো-অবশ্য আপনার যদি বাড়তি থাকে-” হেরম্ব হাত জোড় করল । “আমায় লজ্জা দেবেন না হীরেনবাবু। আপনার কাছে দাম নেবো ! নেহাৎ যদি এসে বসে গরীবের সঙ্গে খেতে না চান আধা ডজন নিয়ে যান। দামের কথা বলবেন না ।” লোকটা কি ব্যঙ্গ করছে ? বাড়ীর মধ্যে নিয়ে গিয়ে বিপদে ফেলবার মতলব করেছে ? কৃষ্ণেন্দু আর সে যে তাকে জব্দ করতে ঝুমুরিয়া এসেছে, এ খবরটা হয়। তো ও জানে। এতটুকু গ্রামে এ সব কথা চাপা থাকে না। হেরম্বের বুকটা একটু টিপ, টিপ করতে লাগল। বারান্দার কাছে গিয়ে দেখা গেল, ফস তোয়ালে ঢাকা ছোট একটি টেবিলে মদের বোতল গ্লাস আর ডিস সাজানো রয়েছে। দুদিকে দুটি চেয়ার। হেরম্ব বলল, “যাবার সময় যত খুশী নিয়ে যাবেন, কিন্তু অনুগ্রহ করে আমার সঙ্গে বসে একটু খেয়ে আমায় কেতাৰ্থ করতে হবে মশায়। লোকনাথবাবুর ছেলেকে একটু এন্টারটেন করবার ভাগ্য যদি হল আমার, বঞ্চিত করতে পারবেন। a rite RSV)