পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုချိရ “আপনি আমার বাবাকে চেনেন ?? ‘র্তাকে কে না চেনে ? মহাশয় ব্যক্তি—আতি মহাশয় ব্যক্তি। ধূলোমুঠো ধরে সোণী করছেন, আমরা কি তঁর পায়ের ধূলোর যোগ্য ।” লোকটি ব্ৰাহ্মণ। ধামিক অর্থাৎ সাধন-টাধন কি সব করে বলে গায়ের লোকে ভয়ের সঙ্গে একটু ভক্তিও নাকি করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে লোকটার মুখে এতবার তার আর তার বাবার পায়ের ধূলোর উল্লেখ শুনে হীরেন একটু অস্বস্তি বোধ করতে লাগল। চেয়ারে বসে, রঙীন পানীয় ভরা বোতলটির দিকে একনজার তাকিয়েই সে খুশী হয়ে উঠেছিল। যেখানে যার কাছে যে অবস্থাতেই পাওয়া যাক, সে ত্ৰাণ পেয়েছে। এত কষ্ট যে তার হচ্ছিল। মদের জন্য এতক্ষণ যেন ভাল করে বুঝতে পারে নি। দ্বিতীয় গেলাস শেষ করে এনে সে বলল, “আপনি যে এত ভাল লোক তা জানতাম না হেরম্ববাবু। কলকাতা গেলে—” “নিশ্চয়, নিশ্চয় । সেকথা বলতে । শীগগির একবার কলকাতা গিয়ে আপনার পিতাঠাকুরের সঙ্গে দেখা করে আসব। একটু পরিচয় করিয়ে দেবেন। কিন্তু।” “নিশ্চয় দেব। বাবা খুব খুশী হবেন। আপনাকে একটু এন্টারটেন করার সুযোগও আমি পাব ।” টেবিলে একসঙ্গে মদ খেতে বসলে অল্পসময়েই হৃদ্যতা জমাট বেঁধে যায়। আলাপ আলোচনা সহজ হয়ে আসে। ভদ্রতা ও অমায়িকতার সীমা কোন পক্ষেই থাকে না । “হঠাৎ ঝুমুরিয়া বেড়াতে এলেন ভাই ?” “বন্ধুর সঙ্গে এসেছি। ঝুমুরিয়া তার বাড়ী । ‘হী হী, তাই বটে। দু’জন নতুন ভদ্রলোক গায়ে এসেছেন শুনছিলাম বটে। বন্ধুকে নিয়ে এলেন না ?”

  • সে এসব খায় টায় না ।”

হেরম্ব হাসল দেখে হীরেনও হাসল। তার হাসি গল্প কমে এল রাত এগারটার সময়। ভেতরে তার একটা উদ্বেগ জেগেছে। নেশ চড়াতে চড়াতে কখন যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে ঠিক নেই। আরও মদ তাকে খেতে হবে, এ পর্যন্ত খেয়ে সে কোনদিন থামতে পারে নি। কিন্তু এখানে তো আর এগোনো যায় না। এবার তার বিদায় নেওয়াই ভাল। কথা বলতেও আর ভাল লাগছে না। চুপচাপ RS