পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী দিগম্বরী তার পাশে বসল। দু'হাতের মুঠোয় তার হাত ধরে বলল, “রাগ করলেন ?? তারপর দিগম্বরীই হাত বাড়িয়ে টেবিলের লণ্ঠনটা নিভিয়ে দিল । বাইরের ডাকাডাকিতে ভোরে আগে ঘুম ভাঙ্গল দিগম্বরীর। হীরেনকে তুলে দিয়েই সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। খিড়কি দিয়ে পালিয়ে গেল। কিনা কে জানে। সকলের আগে হীরেনের চোখে পড়ল টেবিলের উপর মদের বােতলটার দিকে । বোতলটা খোলাও হয়নি। তার মদ খাওয়ার ইতিহাসে এটা ঘটল। এই প্ৰথম। মদ না ছুয়েও তার বেশ দিন কাটে, কিন্তু যখন আরম্ভ করে তখন বেহুস না হয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষমতা তার হয় না। বাইরে সমানে ডাকাডাকি চলছিল। হীরেন গিয়ে সদর দরজা খুলেই দেখল, পুলিশ। বুকটা তার ধড়াস করে উঠল। তার জন্যই পুলিশ এসেছে। তবে তাকে ধরে নিয়ে যেতে নয়। কিছু খোজখবর নিয়ে, কৃষ্ণেন্দু সম্পর্কে তাকে কতকগুলি প্রশ্ন করে, পুলিশ বিদায় নিল। সার্ট গায়ে ধুতিপরা যে এই সব জিজ্ঞাসাবাদ করল, তার কাছেই জানা গেল যে কৃষ্ণেন্দু আর মোহনকে কোন নির্দিষ্ট আইনে গ্রেপ্তার করা হয় নি। আদালতে তাদের বিচার হবে না, জেলও হবে না । কোথাও শুধু আটক রাখা হবে, আর কিছু নয়। ব্যাপার খুব সামান্য । “কৃষ্ণেন্দু এখানে এসেছে আপনার খবর পেলেন কি করে ?” সে শুধু একটু হেসেছিল। হীরেন একেবারে সুন করে ফেলল । সমস্ত জগৎ কেমন যেন শান্ত, সহনশীল হয়ে গেছে। গভীর সন্তোষ যেন শুধু মন নয় দেহেরও সম্পদ। নতুন দিনের নতুন রোদ, সুন্দর সোনালী রোদ, পৃথিবীর কোথাও ক্ষোভের চিহ্ন খুজে পাচ্ছে না, জীবনের সীমাহীন প্ৰান্তর কচি ঘাসে ছেয়ে গেছে। ফাকি নেই, নালিশ নেই, সন্দেহ নেই, বিচার নেই-সরল হয়ে গেছে বেঁচে থাকা । দিগম্বরী চা করে দিল। নির্বাক, উদভ্ৰান্ত, চিন্তাময়ী দিগম্বরী-নতুন বৌটির মত লজ্জার ভারে সকাতরা, সুখ-বিহবল দিগম্বরী। হীরেন। উৎসাহের সঙ্গে বলল, “আরো এ কি ! ওসব কিছু নয়, বৌঠান।” RNR 8 =" "”..። سنبھلاڑیونانسیسیسات ۔۔۔