পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(၇အိုရ স্কুলে হাজির হতে হলে এবার ওঠা চাই। নেয়ে খেয়ে যাবার দরকার হবে না, জামাটা গায়ে দিয়ে যাবার পথে বীরেশ্বরের মেয়েটাকে একবার দেখে যাওয়া চলবে। স্কুল যে আজ বসছে না। তাতে আর কারো সন্দেহ নেই । ঘনশ্যামের চাল ডাল তেল নুনের দোকানের সামনে জড়ো হয় চাষী মেয়ে পুরুষ। সওদা কিনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আলাপ করে। লোমশ বুকে হাত বুলাতে বুলাতে মদন বলে, “মতলব আছে, আরও মতলব আছে। নয়তো কি এমনি ধরিয়ে দিল ওনাদের ? শত্তর সরাবে সব কটাকে এক এক করে, তদিনে রাস্তা শেষ, তারপর মেয়ে চালান দেবে। রাধ। আর বিন্তিকে বেচে লাভ করেছে হাজার হাজার টাকা । করে নি ? তবে কি ! হাঃ ।” মাতু বলে, “ভরত না বিয়ে করেছে রাধাকে ?” রাধার মায়ের দূর সম্পর্কের কুটুম হীরু ঘোষ ঝাঁঝালো হাসি হেসে বলে, ‘মাসীর যেমন মাথা খারাপ। চাকরের সাথে বিয়ে দিতে ও ব্যাটা মেয়ে চুরি করে, না ? সব ফাকি, চালাবাজী—কেউ না নালিশ করতে পারে। মেয়ে চুরির মামলা কর, ভরত বলবে আমার বিয়ে করা বেী, দশটা লোক সাক্ষী দেবে, ই বিয়ে হয়েছে ঠিক, মন্তর পড়া বিয়ে! নইলে দিতাম না নালিশ ঠিকে রাধার মা যখন কেঁদে এসে পড়লো ? দেখে নিতাম না কত বড় বামুনের ছেলে ? ‘বামুনের ছেলে এমন হয়, মাগো !” “হয় না ? রাবণ কি ছিল ? কুম্ভকৰ্ণ ? “আর সয় না বলছি মাইতি মামা, মাইরি। রেত বিরেত একলাটি পেলে দিতাম মাথায় লাঠি বসিয়ে, যা থাকে আদেষ্টে ।” নাটু গোঁসাই বিজ্ঞের মত বলে, “আরো না, মেয়ে চুরি নয়। মেয়ে তো ফের দেখতে ভাল হওয়া চাই, হেথা হোথা দু’চারটে পেল তো নিল, নয় তো নয় । রাস্তা করবে। আরেকটা-গায়ের বুক দিয়ে। এ রাস্তা থেকে বার করে সিদ্ধে টেনে নিয়ে যাবে সা”পুরের রাস্তায়। সড়ক ছোবে না, ফসল জমি বসত বাড়ীর ওপর দিয়ে রাস্তা চালাবে। জলের দামে কিনবে সব, দলিল তৈরী হচ্ছে খাপর জানি।” সকলে স্তব্ধ হয়ে যায়। শঙ্কায় ছোট হয়ে যায় চোখ। এতে অসম্ভব নয়, এই রাস্তা তৈরীর মধ্যেই তার অনেক প্ৰমাণ মিলেছে। R\99