পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৰ্পণ জাগা চাঞ্চল্য। নতুন লোক জুটে ছোট দলটি ক্রমাগত বড় হয়ে পড়বার উপক্রম ঘটে, মহীউদ্দীন তাদের সরিয়ে দেয়, বলে, “আমাদের সঙ্গে নয়-সভায় আসবেন, সভায় । অন্যদিকে যান- দশজনকে খবর দিন ।” দলটি উত্তরপাড়া ঘোরা শেষ করেছে রামপাল এসে দলে মিশল। রম্ভার পাশে চলতে চলতে বলল, “আর না, এবার ফিরে চল । তোমার শরীর ভাল না-” রম্ভ ভ্ৰকুট করে তাকাল, কথা কইল না। রামপাল আর কিছু বলতে ভরসা পায় না, নানা কথা ভাবতে ভাবতে দলের সঙ্গে চলতে থাকে। হঠাৎ সে বাজনাদে চীৎকার করে ওঠে, “হেরম্বকে খুন করে ! হেরম্বকে খুন করে !” “আরে! আরে! আরে!” মহীউদ্দীন ধমকে ওঠে, “কি করছ, তুমি ? কি বলছ পাগলার মত ? রামপাল অসহায়ের মত রম্ভার দিকে তাকায়। ‘তুমি যে বললে ?” ‘আমি ওকথা বলতে বলছি ? আমরা কি বলছি শুনতে পাওনা, হেরম্বর নিপাত যাক ?” “ও, হা। ভুলে গেছিলাম।” রামপাল সলজভাবে হাসে, 'মাথার কি ঠিক আছে ছাই। ছেলাপিলা হবে তোমার, তুমি এ রোদের মধ্যে—” আবার রম্ভার ভ্ৰকুটি দেখে রামপাল থেমে যায়। পাচনিখে পৌছে রম্ভার শরীর একটু অস্থির অস্থির করতে থাকে, তলপেটে একটা এই-আছে এই-নাই অস্বস্তি পাক দিয়ে ঠেলে উঠতে চায় । মাথার মধ্যে ঝিম ঝিম করে। রোদের তেজ বাড়তে বাড়তে যখন মাথার তালু পুড়িয়ে দিচ্ছে, রাস্তা গরম হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ থেকে জোরালো হাওয়া না বইলে সকলে তারা আরও বেশী কাবু হয়ে পড়ত। পাচনিখের থানার কাছাকাছি রম্ভার হঠাৎ এত জোরে বমি ঠেলে ওঠে যে সে সামলাতে পারে না। পথের ধারে একটা তেঁতুল গাছের নীচে সে বমি করতে বসে। চুনকাম করা সাদা দেয়াল থানার, খড়ের পুরু চালা। সামনে কঁাকর বিছানো পথে দু’ভাগ করা ছোট বাগান, তাতে সযত্নে সাজানো ফুলের গাছ। দু’ঘণ্টা আগে একটা রিপোর্ট লিখতে বসে। শৈলেন দাস আর চেয়ার ছেড়ে ওঠে নি । সামনে মাত্র কয়েকলাইন লেখা রিপোর্টটা পড়ে আছে। তার উপরে খোলা R8) (e) Yves