পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ফাউণ্টেন পেন। পেনাটি শৈলেন স্ত্রীকে উপহার দিয়েছিল। কিন্তু থার্ড ক্লাসের বিদ্যা নিয়েও কল্যাণী মাসে অতিকষ্টে দু’খানার বেশী চিঠি কখনো লেখে না। কলামটা তাই শৈলেন নিজেই ব্যবহার করে। রিপোর্ট লিখতে আজ তার মন বসছিল না । বিরক্তি আর বিষাদ মেশানো তিক্ততা তাকে উন্মনা করে রেখেছে। মন ভার, বুকে একটা অনির্দিষ্ট নালিশের জালা, কার বা কিসের বিরুদ্ধে জানা নেই । দু’বছর প্রমোশন বন্ধ। জীবনে বুঝি কিছু করা গেল না। কলেজ জীবনের কথা শৈলেনের মনে পড়ে। ভেসে আসে বন্ধুদের কথা, আদর্শের তর্ক, উত্তেজনা, আনন্দ, বিষাদ ও স্বপ্ন। চারিদিক থেকে নানা খবর এসে পৌছয়। কল্পনায় অতীত জীবনের বন্ধুরা সারি দিয়ে সামনে দাড়িয়ে বলে, আয়, খবর নিয়ে খেলা করি । মহীউদ্দীনের দলের আওয়াজ দূর থেকে কানে আসে। সে উৎকৰ্ণ হয়ে থাকে। কি করা যায়। হে ভগবান, কি করা যায়। আবার কেন ? শেষ হয়ে সব চুকে বুকে যেতে পারে না একেবারে ? জমাদার এসে বলে, ‘হুজুর ?” না, চারিদিক বিবেচনা করে কাজ করতে হবে। মন খারাপ করলেও চলবে না, মাথা গরম করলেও চলবে না । ‘কেতনা আদমি ?” “পন্দরে হোগা ।” “ঠিক হয়। যানে দেও।’ ] কাছাকাছি এসে আওয়াজ থেমে যাওয়ায় খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে শৈলেন বাইরে গিয়ে কনেষ্টবল ধারণীকে জিজ্ঞাসা করে ‘ফিরে গেল ?” “আজো না । সঙ্গে একটা মাগী ছিল, বমি করছে। বীরেশ্বরের মেয়ে ।” হঠাৎ কেন রাগ হয়ে গেল। শৈলেন জানে না। সজোরে সে এক চপেটাঘাত, বসিয়ে দিল ধরণীর গালে । ‘মাগী কিরে শূয়ার ? দুপুরে হেরম্ব এল। ‘সভাটার ব্যবস্থা করতে হবে শৈলেনবাবু! ' নোটের তাড়াটা মুঠো করে শৈলেন বলে, “সে তো এমনিও করব ওমনিও করব। কেন মিছিমিছি Հ8Հ