পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হেরম্ব সবিনয়ে হাসে । “কি যে বলেন ।” একটু সুস্থ হলে রাস্তা বলে, “তোমরা এগোও। আমি একটু জিরিয়ে-’ শন্তু জোর দিয়ে বলে, “বাড়ী ফিরবে। একটা গাড়ী পেলে হত।” মহীউদ্দীনও সায় দেয়, জোর দিয়ে বলে, “তোমার আর আসতে হবে না । তুমি বাড়ী ফিরে যাও।” রম্ভ বলে, “আচ্ছা। তোমরা তবে এগোও শাস্তু, আমি ওর সাথে ফিরে যাব। গাড়ী দরকার হবে না।” তেঁতুল গাছের ছায়ায় রম্ভ ও রামপালকে রেখে অন্য সকলে এগিয়ে যায়। দূরের সমুদ্রের বাতাস গাছের পাতায় ঝির ঝির আওয়াজ তুলে বইতে থাকে, রস্তার শরীর ধীরে ধীরে জুড়িয়ে আসে। রামপাল চুপচাপ বিড়ি টানে, গভীর মুখে মাঝে মাঝে ভৎসনার দৃষ্টিতে তার দিকে তাকায়। দেহমানে জুত পেলে রস্তা একটু হাসে তার দিকে চেয়ে। ‘বলিস নি যে আমায় ?” গভীর অভিমানে রামপাল অনুযোগ দেয়। “বলতে হবে কেন ? চোখ নেই কো তোমার ?” রস্তার সর্বাঙ্গে চোখ বুলিয়ে রামপাল শুধোয়, “ক” মাস ? ‘তিনমাস চারমাস, কে জানে বাবা, আত কে জানে!” 'বললাম। এ রোদে বেরোস নি, বেরোস নি। গোয়ার মেয়ে বটে তুমি। হল ত «գՀՀ ? রস্তা। তবু হাসে, “কি হল ? একটু বমি হল তো কি। ও সবার হয়।” শাস্তুরা একটা গরুর গাড়ী পাঠিয়েছিল, গাড়ী এসে পৌছবার আগেই দুজনে উঠে চলতে আরম্ভ করে। রামপালের গাড়ী সংগ্রহ করে আনার কথা রম্ভ কানেও তোলে না। চলতে চলতে রম্ভ টের পায়, তাকে নিয়ে চারিদিকে বেশ উত্তেজনা স্বষ্টি হয়েছে। বেড়ার ফাকে ফঁাকে মেয়েলি চোখ উকি দেয়, বাইরে পুরুষেরা চােখ বড় বড় করে তাকে দ্যাখে। এ ওর গা টিপে তাকে দেখিয়ে দেয়, আড়বৃষ্টি তার পানে রেখে কথা বলাবলি করে নিজেদের মধ্যে । হাসাহসিও চলে এখানে ? ওখানে, তবে তাদের সংখ্যা খুব কম। কৌতুহল, বিস্ময় আর উত্তেজনাই বেশী। ঝুমুরিয়ার রঘু সামন্তের বাড়ীর সামনে অনাথকে ঘিরে কয়েকজন জটিল। করছিল, তিরিশ থেকে বিশ বছরের সব ছোকরা। রন্তাকে দেখেই তাদের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়, আরম্ভ হয়, অভদ্ররকমের হাসাহসি আর মন্তব্য-রস্তা আর RS