পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী কাজ শেষ হওয়া মাত্র একটা भूख्द्धि অনুভূতি জাগিয়াছিল, বড় বিস্বাদ অনুভূতি। অনেক দিন আগে, পঁচিশ ত্রিশ বছর আগে, এই সহরে বিদ্যার্থীর জীবন যাপনের সময় মুক্তির যে উদভ্ৰান্ত কামনায় সর্বদা মন ব্যাকুল হইয়া থাকিত, তাই যেন পচিয়া গলিয়া মুক্তির মোহে পরিণত হইয়াছে ; অন্ন যেমন পরিণত হয় মদে। পথ চলিবার চিরসার্থী বগলের ছাতিটি ঘরে ফেলিয়া রাখিয়া মানুষটা আজ অকারণে পথে পথে কত যে ঘুরিয়াছে!! ঘুরিয়া ঘুরিয়া অপরাহ্ন। বেলায় রাজপথের এই মস্ত চৌমাথার ধারে কি শ্ৰান্ত হইয়াই সে দাড়াইয়া পড়িয়াইেছ! এখন আর কিছুই সে চায় না, পথের ওপারে গিয়ে বাসে উঠিয়া হোটেলে ফিরিয়া যাইবে, নিমীলিত চক্ষে একটু বিশ্রাম করিবে হোটেলের আরামহীন শয্যায় গড়গড়ার নলের অভাবে অস্বস্তিকর। আলস্যে, তারপর ছাতিটি বগলে করিয়া পুরাণে ব্যাগটি হাতে ঝুলাইয়া স্টেশনে গিয়া ধরিবে রাতের গাড়ী। সকালে সে গাড়ী তাকে তার গ্রামের কঁকার-বিছানো নিজন স্টেশনে নামাইয়া দিবে। স্টেশন হইতে গ্রামের হাট পৰ্য্যন্ত পাকা বঁধানো পথ, সেখান হইতে কঁাচা মাটির পথে মাইলখানেক হঁটিলে তার ঘরের দুয়ার। কঁচা মাটির পথ ? একি আশ্চৰ্য্য কথা যে সেই কঁচা মাটির পথে তাকে সহরের দিকে যাত্রা শুরু করিতে হইয়াছিল, সহরে তার নিজের প্রয়োজন ছিল বলিয়া ? সে পথটিও কি সহরের জন্য ? মাথাটা কেমন গুলাইয়া গেল,—পথের একেবারে মাঝখানে। দূৱন্ত বেগে সে পথে অবিশ্রাম গাড়ী চলাচল করিতেছিল। পাঁচিশ ত্রিশ বছর আগে এই সহরে সে বিদ্যা অজ্জন করিতে আসিয়াছিল। কিন্তু বাস তার গ্রামে, মানুষটা সে গ্ৰাম্য। দোতলা একটা বাসের নীচে চাপা পড়িয়া কয়েক মিনিটের মধ্যে সে মরিয়া গেল । পিতা স্বৰ্গে গেলেন। মনোমোহন ভাবিল, এবার তবে সহরে গিয়াই বাস कलू। धादि । গ্রামের জ্ঞানী বৃদ্ধের গুজব শুনিয়া বলিলেন, “জানতাম। আগেই জানতাম ৰূপ চোখ বুজবার পর বছর ঘুরবে না।” খৃঃ মা বলিলেন, “তাই কি হয় বাবা ? - এখানে যথাসৰ্বস্ব ফেলে রেখে সবাই মিলে 'ঝুলকাত্মা গিয়ে থাকিব, এ ৰে পাগলের মত কথা বলছিস তই ৷” &es