পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী শুধু স্পষ্ট করিয়া দেয়। কানে যেন তালা লাগিয়া যায় আর শব্দহীনতা দপ দীপা করিতে থাকে । নটা-দশটার সময় হইতে রাত্ৰি দুটো-তিনটে পৰ্য্যন্ত শ্ৰান্ত দেহ যখন ঘুম চাহিয়া পায় না। তখন হইতে প্রতিটি মিনিট মনোমোহনের কাছে রাতিজাগার কষ্টে ভারি '& छ्द् छ्शेश।। ९८ ।। তৃতীয় রাত্রি এমনিভাবে কাটিল । পরদিন সকালে সে চিন্ময়ের বাড়ী গেল । অনেকদিন পরে বন্ধুর সঙ্গে এই সাক্ষাতের আনন্দ ও উত্তেজনা মনোমোহন ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিল। ভাবিয়াছিল, এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস আরম্ভ করিয়া একদিন চিন্ময়কে একেবারে বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করিয়া আশ্চর্য করিয়া দিবে : তাকে দেখিয়া সে সহরে বাস করিতেছে জানিয়া, সহরের কোন পাড়ায় কেমন একটি বাড়ী সে কিভাবে সাজাইয়াছে লক্ষ্য করিয়া, বন্ধু ও অতিথিকে বাড়ীতে আদর-অভ্যর্থনা করার ব্যবস্থায় নিখুত মাজিত রুচির পরিচয় পাইয়া চিন্ময় ভাবিবে, কই না, মনোমোহন তো মোটেই পাড়া গেয়ে নয় ! তিনবার তার গ্রামের বাড়ীতে বেড়াইতে গিয়া তার সম্বন্ধে যে ধারণা চিন্ময়ের নিশ্চয় জাগিয়াছিল, এতকাল পরে সে ধারণা তার ভাঙ্গিয়া যাইবে । কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে একটি সার্থীর অভাব তিন দিনের মধ্যেই তাকে এমন কাবু করিয়া দিল যে চমক দেওয়া আঘাতে চিন্ময়ের ধারণা পরিবতন করার সাধটা বাতিল না করিয়া পারা গেল না । চিন্ময় আগেই জানিয়া রাখিবে যে সে সহরে বাস করিতে আসিতেছে । জানুক, উপায় কি । নাম করা হোটেলটির চার্জ বড় বেশী । মনে মনে খরচের হিসাব আওড়ানো মনোমোহনের অভ্যাস দাড়াইয়া গিয়াছে, ক'দিন এই অনাবশ্যক মোটা খরচের চিন্তাটা বড বিধিতেছিল। আজ এই অপব্যয়ের সমর্থনে একটা ভালমত যুক্তি জুটিয়া যাওয়ায় সে স্বস্তি বোধ করিল। চিন্ময় নিশ্চয় জিজ্ঞাসা করিবে, সে কোথায় উঠিয়াছে – হোটেলের নামটা তখন নিঃসঙ্কোচে উচ্চারণ করা চলিবে! চিন্ময়ের বাড়ীর সামনে বাগান আছে। কয়েক হাত মোটে চওড়া, তবু নিখুঁত ভাবে সাজানো ফুলের গাছে ঠাসা বাগান। এটা সহরের এই নবোদগত অঞ্চলের AWeA