পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা “যাও’ সে বলিল ড্রাইভারকে । শো করিয়া গাড়ী চলিয়া গেল । মোহন কখনো চাকরীর জন্য উমেদারী করে নাই কি না। তাই কেদারের ব্যবহারে অমায়িকতার জোয়ার আসিবার আগেই ভাটা আসিল কেন ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারিল না। এজন্য বিস্মিত হওয়ার অবসর কিন্তু সে পাইল না, বিস্ময় জাগিল অন্য কারণে । পথের ওপারে দু’টি নূতন তিনতলা বাড়ীর মাঝখানে একটি খোলার বাড়ী, মাটি লেপা দেয়ালে। আলকাতরা মাখানে কাঠের গরাদের জানলা । খোলা দরজা দিয়া ভিতরে একটা মাচার খানিকটা অংশ চোখে পড়ে, সবুজ সতেজ পাতার মধ্যে কয়েকটা হলদে ফুল ফুটিয়া আছে, একটি পরিপুষ্ট কুমড়া ঝুলিতেছে। ম্যাজিক নয়তো ? এই পাড়ায় চিন্ময়ের বাড়ীর এত কাছে বঁাশের মাচায় কুমড়ো ফুল এবং ফল ! দুপুরে হোটেলের ঘরে বসিয়া মোহন লাবণ্যশ্ৰীকে একখানা চিঠি লিখিল । চিঠিখানা লিখিবার জন্যই দামী একখানা প্যাড কিনিয়া আনিল । निशिब्ल : আসিবার আগের দিন তুচ্ছ কারণে ঝগড়া করে তোমায় কঁাদিয়েছিলাম, অতটা বাড়াবাড়ি করা আমার উচিত হয়নি। সারাদিন তোমার সঙ্গে কথা বলিনি, বিকালে তুমি নিজে খাবার এনে দিয়েছিলে কিন্তু খাইনি, রাত্ৰে তুমি কঁদতে আরম্ভ না করলে হয়তো তোমার সঙ্গে ভাব না করেই কলকাতা চলে আসতাম । আমার ওরকম জিদ চেপেছিল। কেন জান ? অনেকদিন একসঙ্গে থাকলে ওরকম হয়, সামান্য কারণে আপনি জনের সঙ্গে সহজেই খিটমিটি বেধে যায়। এখন বুঝতে পারছি, এই জন্য বৌদের মাঝে মাঝে বাপের বাড়ী যাওয়া ভাল। আমি যে নিষ্ঠর ব্যবহার করেছি, সেজন্য ( "আমায় মাপ করো’ লিখিয়া, একটু ভাবিয়া কথাগুলি মোহন কাটিয়া দিল) মনে দুঃখ রেখো না । সেকথা যাক, তোমায় একটা দরকারী কথা লিখতে চাই। আগেও অনেকবার এ বিষয়ে তোমায় বলেছি কিন্তু সামনাসামনি বলার জন্যই বোধ হয় কথাটা তোমার তেমন S ዓ ፩