পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা তারা বসিয়া আছে। অনেকবার তার দেশের গ্রামের উত্তরে রঙ্গনাথের মাঠে বসিয়া সে দূরে আলো জলিতে দেখিয়াছে। সে আলো একটি নয়, অনেকগুলি । মোহন অস্বস্তি বোধ করিতে থাকে, সন্ধ্যার কথা না উঠা পৰ্য্যন্ত কোন কথাই তার ভাল লাগে না । চিন্ময়ের মুখে সন্ধ্যার সঙ্গে তার বিরোধের বিবরণ শুনিয়া তার মনে হয়, এই ঘরখানা যেন সেই মনান্তরের কারণটির সহজ সরল ব্যাখ্যার মত। এত বড় বাড়ীতে এই একটিমাত্র ঘর যেমন চিন্ময়ের পাগলামির প্রত্যক্ষ পরিচয়, সন্ধ্যার সঙ্গে সর্বাঙ্গীন মিলের মধ্যে একটিমাত্র অমিলও তেমনি তার বিকারের প্রমাণ । বিবাহের আগে চিন্ময় তাকে চিঠিতে যা লিখিয়াছিল, মোহন আগেই জানিত সে সব বাজে কথা । কোন মন চিরদিন রূপকথার রাজকন্যার গায়ে সোনার কাঠি ছোয়ায় না। রাজকন্যার ঈর্ষা নাই, মানুষের সঙ্গে মানুষের সুখের ঘরকন্নায় সে বাধা দেয় না । কোন অজানা কারণে মোহনের রাজকন্য। বাঙ্গলার মধ্যবিত্ত গৃহস্থ কন্যা সাজিলেও সেজন্য সন্ধ্যাকে নিয়া তার অসুখী হওয়ার কথা নয় । সন্ধ্যা ঘোমটা টানিয়া অন্তঃপুরচারিণী সাজিলেই বরং তার অসুবিধার সীমা থাকিত না । নিজে সে যে জীবন যাপন করে,-এই ঘরে খেয়ালের বশে মাঝে মাঝে দু'এক ঘণ্টা অবসর যাপন করা ছাড়া-তাতে সন্ধ্য। যেমন আছে তেমনি না হইলে জীবনসঙ্গিনী তাকে করা চলিত না । তাই ঘরে ও বাহিরে সন্ধ্যার সাজপোষাক চালচলনের এতটুকু সংস্কার চিন্ময় দায়ী করে নাই শুনিয়া মোহন अ*5र्षJ श् = । “আমি কিছুই চাইনি ভাই, শুধু একটি ছেলে চেয়েছিলাম। আমার মতে বেশী বয়সে বিয়ে হলে প্ৰথমেই ছেলেমেয়ে হওয়া ভাল-অন্ততঃ একটি। ও বললে পাচ বছরের মধ্যে ছেলেমেয়ে হওয়া চলবে না, পাঁচ বছর পরে দেখা যাবে। প্ৰথমে হাসতে হাসতেই আলোচনা হত, তারপর আমি যত জোর করতে লগলাম, ওর জিদও তত চড়তে লাগল। শেষে একদিন বাবার কাছে চলে গেল । কি বলে গেল জানো ? পাচ বছর পূর্ণ হলে ফিরে আসবে।” “পাচটা বছর ধৈৰ্য্য ধরলেই পারতে ? দেখতে দেখতে কেটে যেত।” ‘কেন ? বিয়ে কি ছেলেখেলা ? একজন ক’মাস হৈচৈ করে বেড়ানো বন্ধ রাখতে পারবে না বলে আরেকজন পাঁচ; রছর ধৈৰ্য ধরবে, আমি ওসব S ግ¢