পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डिब्ञ বাপের বার্ষিক শ্রাদ্ধে মোহন খুব সমারোহ করিল। দেশে এই তার শেষ সামাজিক কাজ, সে গ্রাম ছাড়িয়া চলিয়া যাওয়ার পরেও বহুদিন যেন মানুষ তার প্রশংসা করে। আত্মীয়-কুটুম্বের আসিল, বন্ধু-বান্ধবেরা আসিল, একটি বৃষ উৎসর্গ করা হইলা, নানা জাতের আরও অনেক লোক ছাড়া শুধু ব্ৰাহ্মণই ভোজন করিল। সাড়ে সাতশো, দু'হাজার কাঙ্গালীর পেট জীবনে হয়তাে এই প্ৰথম অথবা দ্বিতীয়বার ভরার মত ভরিয়া গেল । চিন্ময় আসিয়া তিন দিন থাকিয়া গেল । এত টাকা খরচ করিয়া বাপের শ্রাদ্ধে এমন সমারোহ করিয়াও বন্ধুর কাছে সে কিন্তু প্ৰশংসা পাইল না। চিন্ময় স্পষ্টই বলিল, “লোকজন খাওয়াচ্ছ তাতে কিছু বলার নেই। বাজে ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে এত টাকা নষ্ট করার মানে হয় 'না করলে লোকে নিন্দ করবে।” আত্মীয়েরা সকলে বিদায় নেওয়ার আগেই মোহন আরেকবার কলিকাতায় গেল। টেবিল চেয়ার সোফা আলমারি র্কাচ ও চীনা মাটির বাসন, কাপেট পর্দা আলো পাখা ইত্যাদি অনেক রকম জিনিস কিনিয়া ভাড়াটে বাড়ীটি ছবির মত সাজাইয়া ফিরিয়া আসিল । দেশের বাড়ী হইতে সেকেলে জমকালো চেহারার তিনটি খাটি আর বাছা বাছা কয়েকটি আসবাব ও জিনিস কেবল নেওয়া হইবে । বাকী অধিকাংশই গ্ৰাম্যতাদোষে দুষ্ট। সহরের সে বাড়ীতে সেগুলি মানাইবে না । লাবণ্যশ্ৰী চোখ বড় বড় করিয়া বলিল, “বাক্স নেব না ?” ‘নেব । কিন্তু খাটের নীচে ঘরের কোণে পাহাড় করে রাখতে পাবে না । সব একটা গুদাম ঘরে থাকবে ।” “একটা রুমাল বার করতে গুদাম ঘরে যাব ?” “সৰ্ব্বদা যা দরকার, সে সব কি আর বাক্সে থাকবে ? রুমাল থাকবে তোমার ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে, আরও অনেক কিছু থাকবে। ড্রেসিং টেবিলটা যা ১ািছ তোমার জন্যে— স্বামীর পছন্দে কিন্তু লাবণ্যশ্ৰীর একেবারেই বিশ্বাস নাই। , Rbro