পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী লোকে ভাবিবে পীতাম্বরের এতটুকু তেজ নাই। রওনা হওয়ার দিন পাশের গায়ে ছিল হাট । বোঝাই গরুর গাড়ী আর মানুষ হাটের দিকে চলিতেছে, সকলে জমিলে তবে হাট জমিবে । ছ’দিন হাটের আটচালাগুলি আর চারিপাশের জায়গা খালি পড়িয়৷৷ থাকে, প্রতি বুধবার সেখানে মানুষের ভিড় জমে। বাহির হইতে মানুষের ভিড় বড় এলোমেলো মনে হয়, যে যেখানে পারে বেসাতি নিয়া বসিয়াছে, যে যেদিকে পারে। চলিতেছে, কোন নিয়ম বা শৃঙ্খলা নাই। কিন্তু ভিতরে গেলে দেখা যায় দোকান-পাটের মধ্যে চলিবার পথ আপনা হইতেই সৃষ্টি হইয়া গিয়াছে, ছোট বড আঁক-বঁকা বিভিন্নমুখী অনেক পথ । বেচিবার জন্য বেসাতি নিয়া বসিবার স্থানও সকলের বহুকাল ধরিয়া সুনির্দিষ্ট झ्छ्रेशा अgिछ । সকলে তাদের গাড়ীর দিকে চাহিতে চাহিতে যায়। মোহন ভাবে, সপ্তাহে এর একদিন হাটে যায়, আবার বাড়ী ফিরিয়া আসে। রাত্ৰি বাড়িতে বাড়িতে একসময় হাট জনশূন্য হইয়া যায়। কলিকাতার হাটে বোমা পড়িতে থাকিলেও এবং বহু লোক পলাইয়া গেলেও টের যাওয়া যায় না। হাটের ভিড়ের চাপ একটু কম হইয়াছে। সহরের হাট ছাড়িয়া যাওয়া অসম্ভব হইয়া গিয়াছে, এমনিভাবে সহরের মানুষের সেখানে সকলে শিকড় গাড়িয়াছে। ট্রেনে মোহন একটি সেকেণ্ড ক্লাস কামরা রিজার্ভ করিয়াছিল। চিন্ময় স্টেশনে আসিতে পারে। রিজার্ভ করা সেকেণ্ড ক্লাস কামরা হইতে ছাড়া মান বজায় রাখিয়া তায় সামনে নামা যায় না । মা মানমুখে এক কোণে বসিয়া থাকেন । লাবণ্য আর নলিনী পাশাপাশি বসিয়া মুখ দিয়া কথা বলে আর চােখ দিয়া বাহিরের দৃশ্য দেখিতে থাকে। খুকী এ জানালা ও জানালা করিয়া বেড়ায়। মার কাছে বসিয়া খোকা জানালার কলকব্জা পরীক্ষা করিতে ব্যস্ত হইয়া থাকে। নগেন অনেকক্ষণ হইতে উসখুসি করিতেছিল, একটা স্টেশনে গাড়ী থামিতে সে হঠাৎ নামিয়া গেল । * “গাড়ী ছেড়ে দেবে নগেন।” Qbや