পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ধনীর টাকা খরচ করতে না পেরে টাকা আটকে রাখে। ওরা সহরে এলেই বরং দেশের উপকার বেশী। সহরের উন্নতির জন্য ওদের দরকার। সহরের উন্নতি না হলে গ্রামের কখনো উন্নতি হয় ?” বক্তব্য স্পষ্ট ও পরিষ্কার, কিন্তু মোহন বুঝিতে পারে না। তার জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখিয়া জগদানন্দ বলে, “সহর মানে বড় বড় বাড়ী, ট্রাম বাস লোকের ভিড় নয়। শিল্প, বাণিজ্য, ধৰ্ম্ম, সমাজ, রাজনীতি সমস্ত বিষয়ে প্ৰতিভাবান মানুষেরা যেখানে «ՊՀիC থাকে, সেটাই হল সহর। এদের দল যতই বাড়ে ততই ভাল। শিক্ষিত আর ধনীরা সহরে না এলে এদের দল বাড়বে কি করে ? এতক্ষণ পরে মোহন মনে মনে একটু রাগিয়া যায়। সে কি ছাত্র যে লোকটা বাড়ী আসিয়া তাকে পড়া বুঝাইতে আরম্ভ করিয়াছে ? মানুষের এসব ব্যক্তিগত উদ্ভট ধারণা চিরদিন তাকে পীড়ন করে । “আমি তিনখানা বই লিখেছি ; ভারতবর্ষ ও সাম্যবাদ, ভারতের সংস্কার আন্দোলনের রূপ, আর বাঙ্গলায় শিল্পোন্নতির পথ। পড়েছেন ?? h 'sा। नांश७ अनिमि ।' জবাব শুনিয়া জগদানন্দ কিছুমাত্র বিচলিত হইল না। বলিল, ‘একেবারেই কাটছে না বই ক’টা । দাম বেশী করিনি, প্ৰত্যেক কপিতে চার আনা করে খরচ বেশী পড়েছে। তবু কেউ কিনতে চায় না। এমনি দিয়ে দিয়েই লোককে পড়াই । আপনাকে ও দেব, পডে দেখবেন ।” জগদানন্দ হাসিল, ‘তিনখানা বই কেউ পড়তে চায় না, তবু আরেকটা লিখতে আরম্ভ করেছি-মানুষের ভবিষ্যৎ । চিন্তাগুলি লিখে তো রাখি, কেউ পড়ে তো পড়বে। সত্য বলে যা জানা যায় সকলকে শোনাবার অধিকার প্রত্যেকের আছে, কি বলেন ?? ‘প্ৰত্যেকে যদি শোনায়, শুনবে কে ? ‘সকলে শুনবে। যে নিজের কথা শোনায় অন্যের কথা শুনতে তো তার বাধা নেই। তা ছাড়া, সত্যের সন্ধান ক’টা লোকে পায় ? আমার নিজের ধারণা সত্য, এ বিশ্বাস কটা লোকের আছে ? মোহন। একটু আশ্চৰ্য্য হইয়া যায়। মানুষটা জানিয়া শুনিয়া আত্মপ্ৰশংসা করিতেছে না। সরলভাবে মনের কথা বলিতেছে ঠিক বুঝিতে পারে না। RNR