পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शानेिक @छ्दी “ফল কেন, খাবার আর চা পাঠিয়ে দেবে যাও।” ছেলের রুক্ষ গলার আওয়াজে মা দমিয়া গেলেন। একটু দাড়াইয়া থাকিয়া চলিয়া গেলেন ভিতরে । এখন পরমানন্দের কথা মোহনের মনে পড়িয়াছে।। জগদানন্দের ব্রাশ করা চুল, পালিশ করা জুতা, জমকালো পোষাক বাধা না দিলে আগেই মনে পন্ডিত। মা দেখিয়াই চিনিতে পারিয়াছেন। গুরুদেবের মৃত্তি তাকে ধ্যান করিত্রে शश, মোহনের মত র্তার মনে পরমানন্দের চেহারা ঝাপসা হইয়া যাইতে পারে মাই। কয়েকবার নিজেদের বাড়ীতেই সে পরমানন্দকে দেখিয়াছে, শেষবার আট দশ বছর আগে । সবচেয়ে ভাল ঘরটিতে ব্যাস্ত্ৰ চৰ্ম্মের আসনে সিধা হইয়া বসিয়া থাকিতেন, বাড়ীতে সকলে পা টিপিয়া টিপিয়া চলিত, ফিস ফিস করিয়া কথা বলিত, শিশু কঁদিয়া উঠিলে তার মা তাড়াতাড়ি মুখে হাত চাপা দিত। শেষদিন তিনি মোহনকে কাছে বসাইয়া এক ঘণ্টা ধরিয়া ব্ৰহ্মচৰ্য্য পালনের উপদেশ দিয়াছিলেন,—সকলের সামনে । কত বয়স ছিল তখন মোহনের ? কুড়ি একুশের বেশী নয়। সে অভিজ্ঞতা মোহন জীবনে ভুলিবে না। সকলের সামনে পরমানন্দ যেন তাকে উলঙ্গ করিয়া দিয়াছেন, তার মনের গোপন স্মৃতি স্বপ্ন মেলিয়া ধরিয়াছেন। সকলের কাছে, দুঃশাসনের চেয়ে তিনি নিষ্ঠর । “আমারও আপনাকে চেনা মনে হচ্ছিল । একটা আশ্চৰ্য্য যোগাযোগ ঘটেছে।” “বেশী আর আশ্চৰ্য্য কি ? দাদার কুড়ি বাইশ হাজার শিষ্য ছিল। আমাদের দু’ভায়ের চেহারারও অনেক মিল ছিল।” চায়ের কাপে চুমুক দিয়া একটু মুখ বাকাইয়া সে কাপটা নামাইয়া রাখে । মোহন বিরক্ত হইয়া ভাবে, মার সঙ্গে আর পারা গেল না । দামী চায়ের সেট কিনিয়া দিয়াছে, লিকার দুধ চিনি কোথায় ভিন্ন ভিন্ন পাত্ৰে পঠাইয়া দিবে, একেবারে কাপে চা তৈরী করিয়া পঠাইয়া দিয়াছে। এ যেন গ্রামের চা-পিপাসু। হালদার আসিয়াছে’ খানিকটা গরম সরবৎ করিয়া দিলেই তার তৃপ্তি হইবে। আবার জ্যোতি আসে । এবার লাবণ্য ডাকিতেছে। 'মা গিয়ে প্ৰণাম করতে বললেন।” লাবণ্য বলে একটু ভয়ে ভয়ে, বিব্রতভাবে। ‘প্ৰণাম নয়, নমস্কার করবে। চলো পরিচয় করিয়ে দিই।’ মোহন জোর দিয়া বলে। RS B