পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী বসে, পীতাম্বর ধরানো বিড়িটা আগাইয়া ধরিলে দু’হাত পাতিয়া জলন্ত বিড়িটা গ্ৰহণ করে, একটু আড়াল করিয়া বিড়িতে টান দেয়। “চালটা মেরামত করা হয়নি ।” 's I' ‘বিষ্ট আর তেমন হচ্ছে না। এইটুকু ভরসা।” 'এখানে হচ্ছে না তো কি ? দেশে হয়তো হচ্ছে ।” “ত হয় ? \ শ্ৰীপতি জানে বৃষ্টি যখন হয় পৃথিবীর সব জায়গাতেই হয়। এখানে বৃষ্টি নামে ଗ[। ଏ3୧0କ{ নামে, আকাশ কি ভিন্ন ভিন্ন। এখানের এবং ওখানের ? দেশের আকাশ ঢাকিয়া যখন কালো মেঘ ঘনাইয়া আসে, এই সহ্যর কি তখন অন্য একটি পরিষ্কার আকাশের নীচে রোদে ঝলমল করে ? পীতাম্বর বাহিরেই বেশী সময় কাটায়, কিন্তু কোথায় যায় কি করে কারো কাছে প্ৰকাশ করে না । পীতাম্বর বাড়ীতে না থাকিলে, জ্যোতির অবসর থাকিলে, শ্ৰীপতি জ্যোতির সঙ্গে গল্প করে। চব্বিশ পঁচিশ বছর বয়স, চুল ছাটার কায়দায় আর হাতকটা ছিটের সার্টে তাকে খুব স্মার্ট দেখায়। প্ৰথমে শ্ৰীপতি তো ভাবিয়াছিল, সে বুঝি মোহনের কোন আত্মীন। জ্যোতির কথা কিন্তু বড় নোংরা । এমনি তাকে দেখিলে মনে হয় শিক্ষিত ভদ্র যুবক বুঝি চাকরের কাজ করিতেছে, তার কথা শুনিয়া শ্ৰীপতির চোখ কপালে উঠিয়া যায়। * কিছু কিছু অশ্লীল আলোচনায় শ্ৰীপতির আপত্তি নাই, গ্রামে দু’চারজন বন্ধুর সঙ্গে ও ধরনের গল্পগুজবে সে আমোদ ও পাইত, কিন্তু জ্যোতির মুখের একেবারে আটক নাই, অনায়াসে এমন কদৰ্য্য মন্তব্য সে করে, এমন বীভৎস বর্ণনা শোনায়, যে কিছুক্ষণের জন্য শ্ৰীপতির কল্পনার নরক সমগ্র জগৎকে গ্ৰাস করিয়া বসে। জ্যোতি নিজের অভিজ্ঞতার কাহিনী শোনায় । আগে যাদের বাড়ী কাজ করিয়াছে তাদের সম্বন্ধে উদ্ভট ও অকথ্য কাহিনী ফলাও করিয়া রং চড়াইয়া বলিয়। যায় । মন্তব্য করে, “সব মেয়েলোক ওমনি,-সব, ওদের জাতটাই বজাত।” শুনিয়া শ্ৰীপতির বুকটা ধড়াস করিয়া ওঠে। কদম। ওদিকে কি করিতেছে কে জানে । V) e