মানিক গ্ৰন্থাবলী নির্ভরশীল সরলবিশ্বাসী হাবাগোবা মানুষটাকে জ্যোতির খুব পছন্দ হইয়া গেল। কথা শুনিতে শুনিতে এমন অভিভূত বিচলিত হইয়া না পড়িলে কি আর কারো কাছে বাহাদুরী করিয়া সুখ হয় মানুষের ? জ্যোতির কবি মন নিজেকে কেন্দ্ৰ করিয়া গৌরবগাথা সৃষ্টি কবে, উদাহরণসমেত জীবনের ব্যাখ্যা শোনায়, দিগ বিজয়ী বীরের মত ললনাকুলের হৃদয়রাজ্য জয় করে, চাণক্যের মত বুদ্ধি কৌশলে শত্রু নিপাত করে, শুধু ভাওতা দেওয়াব ক্ষমতায় বিষম বিপদ হইতে উদ্ধার পায়। বিব্রত হইয়া অভিভূত হইয়া উত্তেজিত হইয়া শ্ৰীপতি তার কথা শোনে। বুঝিতে পারা যায় সে ভাবিয়া পাইতেছে না। এই বীরপুরুষটি, বুদ্ধিমান মহাপুরুষটি সতের টাকা বেতনে মোহনের বাড়ী চাকরেব কাজ করিতেছে কেন । জ্যোতি তৃপ্তি লাভ করে। লেখকের যেন ভক্ত জুটিয়াছে, ধনীর যেন পার্ষদ জুটিয়াছে। একদিন সন্ধ্যার পর জ্যোতি গেয়ে মানুষটিকে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতাব ভাগ দিয়া ধন্য করার জন্য সঙ্গে নিয়া গেল । বাড়ীর পিছন দিকটা দক্ষিণ, সে দিকে কয়েক মিনিট হঁটিলেই সহরের পুরাণে। দিনের সব বাড়ী মেলে, বাড়ীগুলির সামনে পিছনে আলিগলিতে কিছুক্ষণ পাক খাইতে খাইতে আগাইয়া গেলে পাওয়া যায় খোলার ঘরের এক বস্তি । সেখানে দুদিকের মাটির দেয়াল হইতে গা বঁাচাইয়া প্ৰায়ান্ধকারে চলিতে চলিতে জানাল। দিয়া চোখে পড়ে আলোকিত ঘর, চেনা অচেনা অতিথিকে অভ্যর্থনা করব জন্য দুয়ারে সাজসোজি করিয়া খোপায় মালা জড়াইয়া মেয়েদের দাড়াইয়। থাকিতে দেখা যায়। সস্তা হরমোনিয়ামের সঙ্গে জবরদস্তি গান, হাসির হুল্লোড আর বাচসা কানে আসে, সমস্ত শব্দ ভেদ করিয়া চড়া তীক্ষা গলায় আর্তনাদ ও মাঝে মাঝে শোনা যায় । এই সরু গলিতে এত মানুষের চলাচল দেখিয়া শ্ৰীপতি অবাক হইয়া যায়। বন্তিতে ঢুকিবার আগে মনে হইয়াছিল জ্যোতি বুঝি তাকে গরীবের শান্ত স্তব্ধ ঘিঞ্চি এক পল্লীতে নিয়া চলিয়াছে, এখন সে অনুভব করে চারিদিকে অনেকখানি পরিধির মধ্যে সমস্ত পাড়াটা মৌচাকের মত মুখরতা আর ব্যস্ততায় 不可引颈国1 চাপার ঘর।
