পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ‘টাকা যে নেই কত্তা ?” “তবে আর কি হবে ? তাই লিখে দে।” মোহন হাসে। শ্ৰীপতিও যেন তার খেলা বুঝিতে পারে, নিজ হইতে তার কাছে টাকা চায় না । মোহনের কাছে চাহিলে যে পাওয়া যাইবে একথা যেন মনেই পড়িতেছে না। তার। বিষঃ চিন্তিত মুখে সে দাড়াইয়া থাকে, চোখের পাতা ‘তুই একটা আস্ত পাঠ শ্ৰীপতি । আমার কাছে টাকা চাইবি তাও আমাকেই বলে দিতে হবে গাধা কোথাকার ?” নিজের সহৃদয়ত কি উপভোগ্য । নিজের আবেগের নেশায় মাতাল হওয়ার মত । দানের চেয়ে দয়ার চেয়ে উদারতার খেলা মানুষকে দেবতা হওয়ার সুখ দেয়। শ্ৰীপতি প্ৰাৰ্থ নয়, ভক্ত । শ্ৰীপতির মুখ হাসিতে ভরিয়া গেলে মোহন নিজেকে কৃতাৰ্থ মনে করে। মোহনের অনুরোধে জগদানন্দ শ্ৰীপতির একটা কাজ জুটাইয়া দিল। প্ৰকাণ্ড একটা কারখানা আছে, অনেকগুলি মোটর আর লরী সেখানে ভাড়ার জন্য মজুদ থাকে, রাশি রাশি গাড়ী মেরামত হয়। Y একটা মজুরকে কাজ জুটাইয়া দিবার অনুরোধ শুনিয়া জগদানন্দ একটু আশ্চৰ্য্য হইয়া গিয়াছিল। তার নিজের একজন ম্যানেজার বেতন পায় হাজার টাকা, তার অনুমোদনে মানুষের দু’শো চার শো টাকার কাজ জোটে, তাকে দিয়া একজন কুলীর কাজ জোটানো ! অনুমোদনের একি অপচয়! তারপর একটু হাসিয়া একটা শ্লিপ লিখিয়। মোহনের হাতে দিয়া বলিয়াছিল, “এটা নিয়ে ফ্যাক্টরীতে যেতে বলবেন ।” অতি অল্প দিনে জগদানন্দের সঙ্গে মোহনের ভাব জমিয়া গিয়াছে। দু'জনের বাড়ীর মেয়েদের মধ্যেও খুব ঘনিষ্ঠত হইয়াছে। সর্বদা যাতায়াত চলে, হাসি, গল্প, গানবাজনা, খেলাধূলায় সময় কাটে। কোথাও যাইতে হইলে দু’বাড়ীর সকলে একত্র হইয়া যায়-সিনেমায়, পিকনিক করিতে অথবা জগদানন্দের যে দু’একজন বন্ধু-পরিবারের সঙ্গে মোহনের বাড়ীর সকলেরও পরিচয় হইয়াছে, তাদের বাড়ীতে। জগদানন্দের স্ত্রী উমিলা সুন্দর গান জানে। Vo S