পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা এমনি ব্যাকুলভাবে সে বাড়ীতে পৌছায়, একতলা হইতেই শুনিতে পায় নগেনের উচ্ছসিত হাসির শব্দ ! মােহন জোরে একটা নিশ্বাস ফেলে । নিজে কলেজে পড়ার সময় বালক নগেনের অসুখের খবর পাইয়া একবার সে ব্যাকুল হইয়া বাড়ী গিয়াছিল, সমস্ত পথ ভাবিয়াছিল, নগেন বাঁচিয়া আছে দেখিতে পাইবে তো ? বাড়ীর সামনে নগেনকে চাদর গায়ে দাড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া সেদিন ও তার এমনি স্বস্তির নিশ্বাস পড়িয়াছিল । মোহন একটু লজ্জাবোধ করিতে থাকে। মাঝে মাঝে কি যেন তার হয়, সামান্য ব্যাপারে একেবারে অস্থির হইয়া পডে। কল্পনায় কোন খুঁত হয় তো আছে, মাঝে মাঝে সাধাবণ বিচারবুদ্ধির বাধা ভাঙ্গিয়া উদ্দাম উল্লাসে খেলা শুরু করিয়া তাকে উদভ্ৰান্ত করিয়া তোলে। ঝরণা সকলকে হাসাইতেছিল আর বিস্মিত দৃষ্টিতে নগেনকে দেখিতেছিল। এত সহজে যে কোন কিশোরকে এভাবে হাসানো যায়। সে বোধ হয় বিশ্বাস করিয়া छेछैिgङ श्राहिङछेिल मा । ছেলেমানুষ ? এমন পাকা আর চালাক ছেলেমানুষ ? মোহনকে দেপিয়া সকলের হাসি থামিয়া গেল । লাবণ্য খসা আঁচলটি খোপায় আটকাইয়া দিল । হাসির শব্দ বন্ধ হইলেও অন্য সকলের মুখে হাসি লাগিয়া ছিল, নগেনের মুখে শুধু হাসির চিহ্ন নাই। এক মুহুর্তে এতক্ষণের আত্মভোলা ছেলেটা সচেতন ও সংযত হইয়া গিয়াছে। দেখিয়া হঠাৎ মোহনের মাথাটা যেন খারাপ হইয়া যায়। সে কারও গুরুজন ? ভারিক্কি গম্ভীর মানুষ সে ? সে আসিয়া দাড়ানো মাত্ৰ সকলের উচ্ছসিত হাসি থামিয়া যায়, হাসি বন্ধ করিয়া তার ভাই চোরের মত চাহিয়া থাকে ? মিথ্যা কথা ! অতি ফাজিল, অতি হাস্কা মানুষ সে, এতটুকু তার গাম্ভীৰ্য্য বা আত্মমৰ্য্যাদাবোধ নাই । থিয়েটারের কমিক অভিনেতার মত হাস্যকর অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে পা টেপা’ টেপা’ দৌড় দিয়া গিয়া সে একটা চেয়ারে বসিয়া পড়ে, বেখাপ্পা উল্লাসের সঙ্গে ব্যগ্ৰভাবে বলে, “কি কি-কি ব্যাপার ? শুনি, আমিও একটু শুনি।’ V2 e di