পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা “তুমি কখনও ফিরে যাবে না ?” ' | মোহন যে জিদের কথা বলিয়া অনুযোগ দিয়াছিল তারই স্পষ্ট প্রমাণের মত স্পষ্ট জবাব দিলে আর কি বলা যায় ? ভালবাসায় বিশ্বাস করে না। বাস্তব জীবনে যে সব চলতি এবং সর্বজন স্বীকৃত ফ্ৰাকি আছে সেগুলিকে ফাকি বলিয়া মানিতে চায় না । সব ফাকি নয়-যেগুলি না মানিলে তার নিজের সুবিধা হয়, কেবল সেইগুলি । যেমন বিবাহের আগে প্রেমের উন্মাদনায় চিন্ময় যে সব আবোল তাবোল কথা বলিয়াছিল। প্ৰতিজ্ঞার মত, চুক্তির মত ওই কথাগুলি চিন্ময়কে সারা জীবন মানিয়া চলি তেই হইবে । এ বিষয়ে আর আলোচনা হইল না। ভবিষ্যতে হইবার আর কোন সম্ভাবনাও রহিল না । মোহনের একবার ইচ্ছা হইল সন্ধ্যাকে জিজ্ঞাসা করে, চিন্ময় টাকা দিতে অস্বীকার করিলে সে কি করিবে ? কিন্তু ইচ্ছাটা সে চাপিয়া গেল । কারণ তাব মনে পড়িয়া গেল, সোজাসুজি ওদের ঝগড়া হয় নাই। এভাবে চিরকাল চলিতে পারে না, ঝগড়া একদিন ওদের হইবেই। সন্ধ্যার পক্ষেও আজ বলা সম্ভব নয় যে হয় আপোষ করা অথবা সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার ওই বাস্তব সমস্যা দেখা দিলে সে কি করিবে । মোহনকে সন্ধ্যা তখন ছাড়িয়া দিল না । এ বেলা তাকে এখানে খাইতে হইবে । খাওয়া দাওয়ার পর দুজনে একসঙ্গে বাহির হইবে। আজ শনিবার, কলিকাতায় রেস আছে। মনসুন কাপে একটা ঘোড়ায় সন্ধ্যা অনেকগুলি টাকা রিস্ক করিবে ঠিক করিয়াছে। ঘোড়াটা জিতিবে,-জিতিবেই। এখন ফেভারিট না হইয়া যায় ঘোড়াটা, তা হইলে বেশী টাকা পাওয়া যাইবে না ! ‘রেসে কখনো জিতেছি সন্ধ্যা ? “উহু । রেসে কেউ জেতে ?” “তবে খেল কেন ? জিততে পারবে না জেনেও টাকা নষ্ট কর কেন ?” “খেলে মজা পাই তাই খেলি ।” V