পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী পলাইয়া গিয়াছিলেন, আরও স্পষ্ট করিয়া সেই কথা বলিয়া ফেলিবার ভয়ে একেবারে চুপ করিয়া রহিলেন। মোহন বুঝিল অন্যরকম। সে ভাবিল, নগেনের জন্মদিনের উৎসব কিনা, এটা তাই মার কাছে অপব্যয় নয়। নগেনকে সে উপহার দিল একটি মোটর সাইকেল । ঝরণাকে উপহারটি দেখাইতে গ্যারেজে গিয়া দু’জনে বহুক্ষণ না ফিরিয়া আসায় মোহন নিজেকে বিপন্ন বােধ করিতে লাগিল। শ'খানেক মানুষকে ঘরে। ডাকিয়া আনায়, দায় দায়িত্ব এড়াইয়া সে গেল খবব নিতে। গ্যাবেজে গিয়া শুনিল ঝরণা নগেনকে বলিতেছে, ‘না না, এতেই হবে, সাইড-কার দরকার নেই । ক্যারিয়ারে বসে খুব যেতে পারব আমি।” ‘কোথায় যাবে তোমরা ?” ‘বজবজ ।” মোটরবাইকে দু’জনে বজবজ বেড়াইতে যাইবে কিনা, তাই বাড়ীর ভিতরে মানুষের ভিড় এড়াইয়া গ্যারেজে মোটরবাইকটার কাছে দাড়াইয়া পরামর্শ করিতে আসিয়াছে। পীতাম্বর রোয়াকে বসিয়া আছে, তবু এখানে পরামর্শ করাই সুবিধা, কেউ বাধা দিবার নাই । আসিয়াছে তারা অনেকক্ষণ, এক ঘণ্টার কম নয়। এত দেরী না করিলে মোহন তাদের খোজ নেওয়া দরকার মনে করিত না । আর কিছু নয়, সত্যসত্যই দু’জনে গ্যারেজে বসিয়া গল্প করিতেছে কি না। জানিবার জন্য মোহনের বড়ই কৌতুহল হইয়াছিল। কুড়ি বছরের বালকের সঙ্গে পচিশ বছরের নারীর বন্ধুত্ব অদ্ভুত, খাপছাড়া ব্যাপার। নগেনের এই বয়সে ঝরণার সঙ্গে চার পাঁচ বছর বয়সের তফাৎটা দু’জনের মধ্যে চাদ আর পৃথিবীর ব্যবধান হইয়া থাকিবে । ড্রয়িংরুমে, বারান্দায়, নগেনের পড়ার ঘরে, নির্জন গ্যারেজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দু’জনের গল্প করাটা সত্যই যুক্তিহীন অসঙ্গত ঘটনা। “তোমায় ডাকছে ঝরণা ।” ‘কে ? 'जीला ७ांकछ।' ‘লীলা ? লীলা তো এসেই চলে গেছে কখন-ফিরে এসেছে নাকি আবার ?” \08 R