পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ‘বটে’? সে বুঝি আসবে না। y চোখের পলকে চাপা যেন বদলাইয়া যায় ! কোথায় যায়। তার এলোমেলো দোলন দোলন নড়াচড়ার ভঙ্গি, কোথায় যায়। তার অমায়িক হাসি। মুখ বাকাইয়া ঝাঝের সঙ্গে বলে, “একলা এলাম চাপা ! সাঙ্গাৎ সাথে এনে চেনা করিয়ে দিল, আজকে আমি একলা এলাম চাপা ! বেরিয়ে যা ঘর থেকে মুখপোড়া বাজ্জাত কোথাকার!” s গাল দিতে দিতে জ্যোতির বিশ্বাসঘাতক বন্ধুকে সে দূর করিয়া দেয়। । জ্যোতির সে যেন বিয়ে করা সতীলক্ষ্মী বৌ, শ্ৰীপতি বাড়ী না থাকিলে গায়েব কেউ ইয়াকি দিতে আসিলে কদম যেমন করে তেমনি করার অধিকার যেন তার ও পুরামাত্রায় আছে। দেহ বেচা যার ব্যবসা তার এটা কোনদেশী নীতিজ্ঞান ? কি মানে চাপার এই অদ্ভুত ব্যবহাবের ? দু’দিন পরে জ্যোতি তাব পেটে আঙ্গুলোর খোচা দিয়া বলে, “বেশ, দাদা বেশ, ডুবে ডুবে জল খেতে শিখেছে ? লজ্জায় শ্ৰীপতি মাথা তুলিতে পারে না। জ্যোতির কিন্তু রাগ হয় নাই, সে শুধু আমোদ পাইয়াছে। সেই দিন সন্ধ্যার পরে সে জোর করিয়া শ্ৰীপতিকে ধরিয়া। নিয়া যায়, আলাপ করিয়া দেয় চাপার প্ৰতিবেশিনী দুর্গার সঙ্গে । চাপা ও আজ হাসিমুখে তার সঙ্গে কথা বলে, সেদিন তার একলা আসার ব্যাপার নিয়া তামাস পৰ্য্যন্ত করে ! জ্যোতি জানিত, চাপাও বুঝিতে পারিয়াছে যে বন্ধুর সঙ্গে সে বিশ্বাসঘাতকতা করে নাই—তার ধারণাই ছিল না যে ওভাবে চাপার কাছে আসিলে কোন দোষ হয় । দুৰ্গা মােটাসোটা শান্ত ভাল মানুষ, চাপার মত চপল নয়। বেশভূষা তার দ্বিতীয় বয়সী গৃহস্থ ঘরের বৌ-এর মত, সীথিতে সিঁদুর পর্য্যন্ত আছে। তার চেহারায় তার কথায় কাজে আর চালচলনে যেন একটা তেজ আর আত্মমৰ্য্যাদা বোধ ধরা পড়ে। ভাঙ্গাচোরা খোলার ঘরে সামান্য উপকরণ নিয়া নোংরা জীবন যাপন করিতে হওয়ায় সে যেন জগৎ-সংসারের উপর রাগ করিয়া গুম খাইয়া अigछ । V2 R