পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা চেহারা আর বেশভুষাও পীতাম্বব বদলাইয়া ফেলিয়াছে। রীতিমত বাবু য়া সে বাহিরে যায় । ঘরে সে ময়লা মোটা কাপড় পরে, ফতুয়া গায় দেয়, প্ৰাচীন বালা পোষটি গায়ে জড়াইয়া শীত নিবারণ করে, বাহিরে যাওয়ার সময় ফস। ধুতির উপর চাপায় ফস। সার্ট, তার উপর পরে ভাল কাপড়ের ভাল ছাটের কোট, পায়ে লাগায় পালিশ করা নতুন জুতা। ঘরে ফিরিয়া সযত্নে জামাকাপড় ভাজ করিয়া রাখে, ন্যাকড়া দিয়া জুতার ধূলা সাফ করে। দু’খানা ভাল কাপড়, দুটি সার্ট আর ওই কোটটি তার সম্বল, তবু কখনো তাকে ময়লা জামা কাপড় পরিয়া বাহিরে যাইতে দেখা যায় না। একটি কাপড় আর সার্ট যখন ব্যবহার করে অন্য কাপড় আর সার্টটি তখন লণ্ডীতে আজেণ্ট হিসাবে ধোয়া হয়। চেহারায় গ্ৰাম্যতার ছাপও সে ছাটিয়া ফেলিয়াছে। আগাগোড়া সমান করিয়া ছাট ছোট চুল নিয়া সে কলিকাতায় আসিয়াছিল, এখন তার চুল বেশ বড় হইয়াছে। স্মার্ট ফ্যাশনে চুল ছাটিয়া রোজ সে সযত্নে চিরুণী চালাইয়া টেরি কাটে। ফাজিল ছোকরার বঁাকা টেরি নয়, সন্ত্রান্ত বয়স্ক ভদ্রলোকের সুবিন্যস্ত ऊाद्विक्रि (प्रैट्नेि । দাড়ি ও সে কামায় ৷ প্ৰত্যেকদিন । নিজেই কামায় । এজন্য সে ভাল একটি ক্ষুরও কিনিয়াছে। ব্ৰাহ্মণ বলিয়। তাকে শ্ৰীপতি আগেও সম্মান করিত কিন্তু সেটা ছিল শুধু তার ব্ৰাহ্মণত্বটুকুর সম্মান, মানুষটার নয়। আজকাল শ্ৰীপতি মানুষ হিসাবেও তাকে সম্মান করিতে শুরু করিয়াছে । আগে দরকার হইলেই পায়ে হাত দিয়া প্ৰণাম করিত কিন্তু তার সামনে, কখনো কখনো তার সঙ্গেও, হাসি তামাসা খোস, গল্প করিতে শ্ৰীপতির বাধিত না । পীতাম্বরকে অবশ্য খোসগল্পে টানা যাইত না, সে স্নান গভীর মুখে চুপ করিয়াই থাকিন্ত-শ্ৰীপতি সেটা তেমন গ্ৰাহ কারিত না । আজ শ্ৰীপতি ঠিক গুরুজনের মতই তাকে মান্য করিয়া চলে, নম্রভাবে সবিনয়ে তার সঙ্গে কথা বলে ! মাঝে মাঝে সে বিস্ময়ভরা চোখে পীতাম্বরের দিকে চাহিয়া থাকে। অবাক হইয়া ভাবে, কি মানুষটা এই সেদিন গাঁ৷ হইতে সহরে আসিয়াছিল, অল্প সময়ের \©¢ ዓ →