পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ‘টোটক ওষুধ চাইছ? দেব বোমা, তোমায় ভাল ওষুধ দেব। তা, অসুখটা কি তোমার ?” লাবণ্য চোখ বড় করিয়া তাকায় । তার অসুখের খবর রাখে না। এমন মানুষও যে জগতে আছে। এ কথা বিশ্বাস করিতেও তার কষ্ট হয়। আর এ লোকটা এতদিন এক বাড়ীতে আছে, বড় বড় ডাক্তার ডাকিয়া এত সমারোহ করিয়া তার চিকিৎসা হইল, আজ ও জিজ্ঞাসা করিতেছে তার কি অসুখ “এমনি অসুখ ।” \ “এমনি অসুখ ? আচ্ছা, ওষুধ দেব। কিন্তু আমার ওষুধে তো ভাল ফল হয় না। বৌমা ? পীতাম্বরকে ডাকিয়া পাঠানোর আগে তারই মুখে শোনা তার নিজের টোটকার গুণ-গান লাবণ্যের মনে ভাসিয়া বেডাইতেছিল। গ্রামের বাড়ীতে আশ্রিত। একজনের ছোট একটি ছেলেকে ওষুধ দিতে আসিয়া তার ওষুধের গুণ গাহিতে এতসব বড় বড় বিশেষণ সে উচ্চারণ করিয়াছিল যে শুনিয়া তখন লাবণ্য হাসি চাপিতে পারে নাই। আজ সেই কথাগুলি মনে করিয়া হাসি পাওয়ার বদলে আশায় সে উৎসুক হইয়া উঠিয়াছিল। পীতাম্ববের মুখে উল্টো কথা শুনিয়া সে বাগিয়া গেল । “যান। তবে আপনি, যান ।” “পীতাম্বর চলিয়া যাওয়া মাত্র সে মোহনকে ডাকিয়া পাঠাইল । “পীতাম্বরকে যেতে বলে এ বাড়ী থেকে ৷” ‘কেন ? কি করেছে। পীতাম্বর ?” ‘আমি ডেকেছিলাম, টােটক ওষুধ কিছু জানে কিনা জিজ্ঞেস করতে। মুখের ওপর এমন কাটাকাটা জবাব দিলে । ওই যেন বাড়ীর কৰ্ত্তা ।” ‘ওকে তুমি জিজ্ঞেস করতে গেলে কেন টােটক ওষুধের কথা ? ‘তুমি তার কি বুঝবে। আমার যন্ত্রণা বুঝি আমি।” বলিয়া লাবণ্য কঁাদিতে লাগিল। কঁদিতে লাগিল সে আত্মমমতায় স্বামীর উপর অকারণ অভিমানে, মুখে কিন্তু বলিতে লাগিল, ‘অনেককাল তো আছে, এবার ওকে বলে দাও, নিজের ব্যবস্থা করে নিক। এখানে আর জায়গা হবে না । ওকে দেখলে আমার গা জ্বলে যায়।” মোহন চিন্তিত হইয়া বলিল, “এতো মহা মুস্কিলে ফেললে। গ্যারেজের এক VV8