পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা “অনেকের সেরে যায় শুনেছি। যেতে বলব না পীতাম্বরকে ?” লাবণ্য ইতস্ততঃ করিয়া বলে, “থাক এখন ।” কিন্তু মোহন এখন ভাবে, কাজ কি ? লাবণ্যের মনে যখন একবার ওরকম খুত খুতানি আসিয়াছিল, কি দরকার পীতাম্বরকে বাড়ীতে রাখিয়া ? আত্মীয় নয়, বন্ধু নয়, চিরদিন ওকে আশ্রয় দানের প্রতিজ্ঞাও সে করে নাই । ওকে এবার যাইতে বলাই ভাল । মনে মনে হয়তো লোকটা সত্যই তার সর্বনাশ কামনা করে। গ্রামে সে মুখেও তাই বলিয়া বেড়াইত, অনেকের কাছেই মোহন শুনিয়াছে। ওকে আর থাকিতে c ७श ऊँSिड नश । না, লাবণ্যের খাপছাড়া ধারণায় সে বিশ্বাস করে না। ক্রিয়াকলাপ তুকতাক মন্ত্রতন্ত্রের সাহায্যে কেউ কারো ক্ষতি করিতে পাবে, তাও পীতাম্বরের মত লোক, এই হাস্যকর ধারণায় মোহন কখনো ভয় পাইতে পারে ? তবু, কাজ নাই তার লোকটাকে ঘরে ঠাই দিয়া। এ জগতে কিসে কি হয় কে তা বলিতে পারে ? ভোরবেলাই ম| কিন্তু তাকে আবার ধাধায় ফেলিয়া দিলেন । পীতাম্বরকে তাড়াইবার সঙ্কল্পে টিলা পড়িয়া গেল, পীতাম্বর রীতিমত একটা সমস্যা হইয়া উঠিল তার চেতনায় ! মোহন ভোরের চা খাইতেছিল--আবছা ভোরে শুধু এক কাপ চা ৷ ছেলেবেলা হইতে বাবা চিরদিন ডাকিয়া তুলিতেন। রাত্রির অগাধার স্নান হইতে শুরু করা মাত্র। গ্রামের সংসারের একাংশ সহরে আনিয়া বাস বঁাধিয়া সহরের জীবনের সঙ্গে এত অল্পদিনে মানাহঁয়া ফেলিয়া ও সে বিছানায় শুইয়া সুৰ্য্যোদয় ঘটিতে দিতে পারে না । দামী খাটের আধুনিক শয্যা যেন কামড়ায়। মা ইতিমধ্যেই স্নান সারিয়াছেন। মা বলিলেন, ‘লাবু পীতাম্বর ঠাকুরকে তাড়াতে চাইছে। তুই কি ঠিক করেছিস জানিনে। কিন্তু পীতাম্বর ঠাকুরকে তাড়ানো কি উচিত হবে ?” ‘উচিত হবে না কেন ? চিরকাল ওকে পুষব বলে তো আনিনি ? পয়সা রোজগার করছে, এবার নিজের পথ দেখুক ।” VO S