পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা জটিল আবৰ্ত্তে পাক-খাওয়া তার চেতনাকে শাস্ত সংহত করিতে নলিনীও যেন চাবুক কষায়, লাগাম আঁটিয়া দিতে চায়। ‘জুতো ছিড়ে গেছে, একটা ভাল শাড়ী নেই, ব্লাউজ নেই। কী করে। পাচটা মেয়ের সঙ্গে চালাই বলতো ? তোমারি তো নিন্দে হবে।” যে প্রশ্ন তুলিতে পারিতেছিল না, যে প্রসঙ্গ আড়ালে ছিল, নলিনী ছেলেমানুষ অভিমানে সেই প্রশ্ন সেই প্রসঙ্গ সামনে তুলিয়া ধরিয়াছে। ‘মা কিনে দেয় না ? নগেন কিনে দেয় না ? কি নিয়ে এত গুজগুজ ফুসফুস চলে তোদের ? “সে তো মা আর ছোড়দা ভাগ হবার কথা বলাবলি করে। আমি কিছু চাই নাকি ওদের কাছে ? চাইলেই তো মুখ খিচিয়ে বলবে দাদার কাছে যা । আমারি হয়েছে মুস্কিল।” বাডীর সাধারণ বেশ নলিনীর । মিলের রঙীন ফাইন শাড়ীটির দাম কম নয়। জামাটি দেখিয়াই চেনা যায়—সন্ধ্যার । দেখাদেখি কিনিয়াছে। পায়ে রঙীন হাল্কা লপেটা । নলিনী আজকাল বাড়ীতে ও লপেটা পায়ে দিয়া চলে ! মোহনা অসহায় বোধ করে। অগত্যা উদারভাবে বলে, “আজি যখন বেরোবি, সঙ্গে যাস, নিজে পছন্দ করে কিনে নিস যা দরকার। ওরা ভিন্ন হতে চাইছে, না ?” 'চাইছে তো । মার সঙ্গে ছোড়দার বনছে না, নইলে কবে ভাগ হয়ে যেত । মা বলছে সব ভাগাভাগি করে দেশের বাড়ীতে গিয়ে থাকতে হবে, ছোড়দা চাইছে কলকাতায় ভিন্ন থাকবে । দু’জনে বনছে না বলেই তো !” নগেনের নীরব ও নিস্ক্রিয় উপেক্ষাই সবচেয়ে মৰ্ম্মান্তিক মনে হয়। তাকে কাছে টানিবার চেষ্টা মোহনের ব্যর্থ হয়, নিজে তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করিয়া আহত হইয়া ফিরিয়া আসে। ভাইটির সঙ্গে বাজে গল্প করিবে ভাবে, গল্প জমে না, নগেন উসখুসি করিতে থাকে। তর্ক করিবে ভাবে, নগেন তর্ক করে না। তাকে খুশী করার জন্য সাংসারিক ব্যাপারে তার পরামর্শ জিজ্ঞাসা করে, নগেন শুধু বলে, আমি কিছু জানি না। দাদা ! তার নিজের ভালমন্দের আলোচনা তুলিলে সে স্পষ্টই বিরক্ত হয়, এ যেন মোহনের অনধিকার চর্চা । চুপচাপ উপদেশ 6*i(न्, भीम व् । একদিন ধৈৰ্য্য হারাইয়া সে তাকে শাসন করিতে গিয়াছিল-তখন উদ্ধত V2R8 R