পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক-গ্ৰন্থাবলী তবে কেমন যেন প্ৰাণহীন মানুষ, জড় পদার্থের মতো, সাড়া দিতে জানে না । শুধু বিবৰ্ণ হয়ে যায়, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। দিন fèstiago Ca(HC5CVS বিরক্ত ও ক্রদ্ধ হয়ে আশার রোখি চেপে গেল। বিয়ের ব্যবস্থাটা দিল বাতিল করে। মুচকে হেসে বলল, “বুঝেছি গো বুঝেছি। আর বিয়ে করতে হবে না। অভিমান করে ।” সেই থেকে এইরকম আরম্ভ করেছে। আশা। এবার একদিন সর্বনাশ৷ হয়ে যাবে ভূষণ যে রাত্রে বাড়ি থাকবে না। কোথাও চলে যাবার কথা মাঝেমাঝে প্ৰসাদ ভাবে। কিন্তু কোথায় যাবে! অজানা অচেনা জগতকে সে কম ভয় করে না । ছোটোখাট ফরমাশী কাজ করে, সাবধানে খেয়ে দেয়ে শরীরটা ভালো রেখে কোনো রকমে এখানে মাথা গুজে সে টিকে আছে। দুর্বল শরীর, এতটুকু অনিয়মে অসুখ হয়। লেখাপড়াও ভালো জানে না, কোনো কাজও শেখেনি। অপরিচিত নিষ্ঠুর মানুষের মধ্যে গিয়ে পড়লে দুদিনে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। পেনোর মাঠের মাঝখানে ভীরু প্ৰসাদকে ঝড় ধরে ফেলল । পরপর কদিন বিকেলের দিকে আকাশে মেঘ ঘনিয়ে এসেছে, এলোমেলো বাতাসও উঠেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিও নামেনি, ঝড় ও ওঠে নি । কিছুক্ষণের মধ্যে মেঘ উড়ে বাতাস পড়ে গিয়েছে, দিগন্তের কোলে শুধু চোখে পড়েছে ঘনঘন ক্ষীণ বিদ্যুতের চমক। প্ৰসাদ প্ৰাণপণে প্রার্থনা করছিল, আজও যেন তাই হয়। নেহাৎ যদি খারাপ হয় তার অদৃষ্ট, শুধু যেন বৃষ্টি পড়ে। বৃষ্টিতে ভিজলেই তার সদিকাশি হবে সন্দেহ নেই, সেই সঙ্গে জ্বর এসে হয়তো শেষ পর্যন্ত দাড়িয়ে যাবে নিমুনিয়ায়, ভূষণের সেজ শালার মতোই হয়তো চারদিনের দিন অচেতন হয়ে সাতদিনের দিন খটখাটে। জ্যোৎসার রাত্রে অজ্ঞান অবস্থাতেই সে মরে যাবে, তবু মাঠে এক ঝড়ের মধ্যে পড়ার চেয়ে তাও অনেক ভালো । আকাশে ধূসর কালো মেঘের দ্রুত সমাবেশের দিকে বারবার তাকাতে তাকাতে দুরুদুরু বুকে প্ৰসাদ জােম পড়ছিল, দূর থেকে ঝড়ের সেঁ-সোঁ আওয়াজ কানে এলো কারখানার দিক থেকে। ন্যাকড়ায় বাধা জামের পুটুলি পকেটে ভরে সেদিকে পিছন ফিরে প্রসাদ ছুটতে আরম্ভ করল। কোনোমতে পেনোর মাঠ পার হয়ে রেললাইন ধরে স্টেশনে পৌছে যদি আশ্রয় নেওয়া যায়। দুশে গজ So S