পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধনজন যৌবন মাথার আলগা কতগুলি চুল পিছনে ঠেলে দিয়েছে, তার নেতিয়ে-পড়ে হেলান দিয়ে বসার ভঙ্গিটা সামনের এক অদৃশ্য মানুষের দেহের চাপে পিছন দিকে বীকা হয়ে যাওয়ার মতো । ‘হোটেলে একটা ঘর নিয়ে রেখেছি।” ‘সত্যি, আপনি কত বড়লোকের ছেলে, কিভাবে আপনি মানুষ হয়েছেন, এসব মহৎ কাজে আপনি এমন ভাবে উঠে পড়ে লাগবেন, কখনো ভাবতেও পারিনি।” ‘সেই ঘরে ফিরে যাই চলে। আজ রাত্রের ট্রেনে আর যাওয়া হবে না।” “এমন অবাক হয়ে গেছে সকলে । সব বড়লোকের ছেলেরা আপনার মতো হলে দেশের ইকোনমিক প্রবলেম কত সহজে সলভড হয়ে যেত!’ গাড়ির গতি কমে আসে, হঠাৎ দমক মেরে রাস্তার বা দিকে দুটি বড় বড় গাছের গুড়ির ব্যবধানের মধ্যে ছোট-বড় আগাছার ঝোপ ঠেলে গাড়ি কয়েক হাত গিয়ে থেমে যায় । , “এই গাডিই তবে আমাদের বাসর ঘর হোক ৷” নির্মলেন্দু গাড়ির আলো নিভিয়ে দেয়। ভিতরের বাইরের সমস্ত আলো । মাধবী দরজা খুলে টুক করে নেমে যায়। দাঁড়ায় গিয়ে পথে। এখানে পথের ধারে অনেক দূরে-দূরেও আলো নেই। দূরে মানুষের বসতি আছে এটুকু শুধু বোঝা যায় দু-একটি আলো দেখে । রাস্তা দিয়ে একটি টিমটিমে আলো দুলতে फुलंङ भ्रष्ट्र গতিতে এগিয়ে আসছে আর পাওয়া যাচ্ছে গরুর গলায় বাধা ঘণ্টার টুং-টুং আওয়াজ। নির্মলেন্দু পাশে এসে দাড়ায়। মধ্য রাত্রির স্তব্ধতায় পাশের ঘরে ঘুমন্ত দাদার ক্রিমির দোষে দাঁতে দাত ঘসার শব্দ মাধবী প্রায়ই শুনতে পায়। নির্মলেন্দুও মুখে তেমনি রোমাঞ্চকর শব্দ করছে। “নিজে থেকে ফিরে চলো, লক্ষ্মী মেয়ে ! নইলে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাব। জানি তো আমায় ?” ‘কী বলছিলাম ? হ্যা-আপনাকে আজকাল দেবতার মতো ভক্তি করি। সাড়ে দশটার গাড়ীতে চলে যাবেন, আর হয়তো সুযোগ পাব না, প্ৰণামটা এখুনি করে রাখি ।” مس সেইখানে হাঁটু পেতে বসে মাধবী প্ৰণাম করে। ব্যাপক প্ৰণাম। সাণ্ডেল পরা পায়ে মাথা ঠেকিয়ে রাখে। কয়েক সেকেণ্ড, সোজা হয়ে ধীরে ধীরে পায়ে 3Հ Գ