পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুখে ভাত দেবার পায়েস। সঙ্গে এল বেলা । ইতিমধ্যে আরেকবার কাপড় বদলে সে তঁাতের কোরা কাপড় পরেছে, সাবান মেখে করেছে স্নান। রান্নার গন্ধ পৰ্যন্ত ছাপিয়ে উঠেছে তার গায়ের তেল সাবানের গন্ধ। “মন দিয়ে রোধে গগন । রান্না ভালো হলে আমি তোমায় একটাকা বখন্সিস দেব ।” ঘণ্টাখানেক পরে আরেকবার সে এল। একা । “কি কি নামালে গগন ? পোলাওয়ের রঙ তো খোলেনি। জাফরান দাওনি বুঝি ? বললাম যে দিতে ?” চারিদিকে একনজর তাকিয়ে “এত আগে বেগুন ভেজে রাখলে কেন ?” বিয়ের আগে দিনের বেলার দাপটের সঙ্গে তার আজকের কর্তালির তুলনাও চলে না, কিন্তু সে দাপটের ধরন ছিল ভিন্ন । চিবিয়ে চিবিয়ে গা-জালানো কথা বলার কায়দাটা সে বিয়ের পর আয়ত্ত করেছে। সে চলে গেলে গগন বললে, “শুনিলি কানাই ? দেমাক দেখলি ?” বন্ধুর বদলে কানাই। কিন্তু বেলারানীকেই সমর্থন করল। “তা, দেমাক ভাই করতে পারে ।” গগন কথাটি না বলে নুনের পাত্ৰ হাতে তুলে নিল। কানাই তাকে চিরদিন সামলে এসেছে, আজ ঝোকটা কোন দিক থেকে এল ঠিক ধরতে না পারায় তার ক্ষমতায় কুলিয়ে উঠল না। হতভম্বর মতো সে শুধু জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “ওকি হচ্ছে ? ওকি করছিস গগন ?” ছোট ছেলেমেয়েরা খেতে বসল। আগে । বেগুন ভাজা ছাড়া সব কিছুই নুন কটা, মুখে দেওয়া যায় না। বেগুন ভাজায় নুন ছড়িয়ে দিতে গগনের খেয়াল छिल नां । 3\92