পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शांभिक ७iश्ांवली ঘূণায় কালচে মেরে গেল, “যে মানুষ অন্যায় সয়ে চুপ করে থাকে-' প্ৰমীলা ঢোক গিলল, “আমরা যে অন্যায় করেছি তা বলছি না, তবু-' কথা বলার সুযোগ আর তারা পেল না। দেখা গেল, চুনীলালের ভাড়াখাটা গাড়িটা সর্বাঙ্গে আওয়াজ তুলে মাটি পাথর আর শুকনো পাতা দলন করে বারান্দার দিকে এগিয়ে আসছে। গাড়ি থেকে নামল একটা কঙ্কাল । পরাশর ও প্রমীলা দুজনেই চমকে গেল ভূপতিকে দেখে। মুখে হাড়ের ওপর যেন আলগা করে চামড়া বসান আছে, শুকনো রঙচটা বাদুড়ের পাখার CIVS পাতলা চামড়া। চোখ কোটরে, মাথায় বেশির ভাগ চুল উঠে গেছে, গলা এমন সরু যে প্ৰতি মুহুর্তে আশঙ্কা হয় মাথার ভারে মট করে মচকে যাবে। হাতের শীর্ণ আঙ্গুলগুলি যেন লম্বায় বেড়ে তেরচা হয়ে গেছে। গা উদলা থাকলে হয়তো তাকে এতবেশি জীবন্ত কঙ্কাল বলে মনে হত না। যে টুকু বাইরে আছে তার বীভৎস শীর্ণতাই যেন ঘোষণা করছে। গরম জামা কাপড়ের আড়ালে শুধু আছে শ্যাওলা-ধরা भाव्ना शg । নামতে ভূপতির কষ্ট দেখে বোধ হয় তাকে সাহায্য করার প্রেরণাতেই প্ৰমীলা সিড়িতে একধাপ নেমে থমকে দাড়িয়েছিল। সেইখানে দাড়িয়ে বিশ্বফারিত চোখে সে ভূপতিকে দেখতে লাগল। ভূপতি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, দেহটাই তার বঁাকা হয়ে গেছে । হাত পা নাড়তে তার সময় লাগে । ধীরে ধীরে পকেট থেকে ব্যাগ বার করে চুনীলালের ভাড়া মিটিয়ে দেবার সমস্ত সময়টা সে থর থর করে কঁাপিতে লাগল। পা টেনে টেনে সিড়ির নিচে এসে মৃত চোখের অসহায় দৃষ্টিতে সে দুজনের দিকে তাকাতে লাগল। পরাশর চেয়ার ছেড়ে ওঠেনি, দু হাতে চেয়ারের দু প্ৰান্ত সজোরে চেপে ধরে মেরুদণ্ড টান করে বসে আছে। মনে হল, প্ৰমীলাকে ধরে বুঝি ভূপতি বারান্দায় উঠবার চেষ্টা করবে। খানিক ইতস্তত করে সে সামনে ঝুকে দু হাত সিঁড়িতে রাখল, তারপর শ্লথ মন্থর চতুস্পদের মতো তিন ধাপ সিড়ি বেয়ে উপরে উঠল। কেঁকাতে কেঁকাতে। প্ৰমীলার চেয়ারে বসে পেছনে হেলান দিয়ে সে চোখ বুজলা। প্ৰমীলা চোখ বুলোতে লাগল। কদম, পেয়ারা, ইউক্যালিপটাস গাছ গুলিতে। ল্যাজফোলা চপল কাঠবেড়ালিটাকে প্ৰাণপণে দেখে, ঘন ঘন পলক ফেলে, চোখ "לא) 3