পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৃতজনে দেহ প্ৰাণ বুজে। সে যেন দৃষ্টিজোড়া অবান্তর, অপার্থিব, অসম্ভব দৃশ্যটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করতে লাগল ভুল বা স্বপ্নের মতো । “তোমার কী হয়েছে ?" পরাশর শুধোেল। মৃদুম্বরে তিনটি শব্দ উচ্চারণ করতেই তার গলাটা গেল কেঁপে । 'টি-বি!” ভূপতি চোখ মেলল না। “এখানে এলে কেন তুমি ?” "মরতে ।” “এ অবস্থায় এখানে আসা তোমার উচিত হয় নি।” ‘উচিত হয় নি মানে ? পাচ সাত দিনের মধ্যে আমি মরে যাব।” ভূপতির গলার আওয়াজ মাঞ্জা দেওয়া সরু তারের মতো ধারাল, বড় মানানসই। তাই শোনাল তার কথাগুলি। প্ৰমীলার কপালের ঠিক মাঝখানে, মেয়েরা যেখানে টিপ পরে, শির শির করতে লাগল আর সর্বাঙ্গে কাটা দিয়ে ক্ষণস্থায়ী তীক্ষ যন্ত্রণার সঙ্গে প্ৰতি লোমকূপে ছুচ বিধল একটা করে। তারপর পরাশর ও প্রমীলার মধ্যে একবার দৃষ্টি বিনিময় হল। পরাশর কী বুঝল, কী ভাবল সে-ই জানে, মুখের শূন্যতাকে বার কয়েক চিবিয়ে নিয়ে সে রূঢ়কণ্ঠে বলল, “তুমি কি আর মরবার জায়গা পেলে না ? ' || এখানে তোমায় আমরা রাখতে পারব না ।”

  • পারবে ।”

‘গায়ের জোরে নাকি তোমার ? ‘জোর কই গায়ে ?” “তোমার মতলব জানি, তুমি প্ৰতিশোধ নিতে এসেছী। ভেবেছ, মরতেই যখন হবে, ওদের ওখানে গিয়ে মরি, দুজনের শান্তি নষ্ট হয়ে যাবে। সিনেমার গল্প ঘেটে ঘেটে তোমার মাথা বিগড়ে গেছে ভূপতি। এ রকম উদ্ভট নাটুকেপনা করে তাই মরতে এসেছ প্ৰতিশোধ নিতে।” “চার বছর সিনেমা ছেড়েছি ভাই, অসুখে ভুগছি। কিসের প্রতিশোধ ? ‘বাজে বোকো না ভূপতি।” “বাজে বকতে সত্যি কষ্ট হয়।” “এসেছি, আজ রাতটা থাকে। কাল সকালে নিজে থেকে যদি না যাও, 8 CS