পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¥øfချ তারপর ক্রমে ক্রমে জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ হবার দাওয়াই পেয়ে সেই আবেগজরের উপশম হয়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে সমস্ত মানুষের সম্পর্কে খানিকটা নির্বিবকার ও প্রায় নির্কিবচার বন্ধুত্ববোধ। কোন মানুষকেই সে বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধাও করে না, তুচ্ছ ও ভাবে না । একক ও সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে মানুষের কাজ ও অকাজ করার বিস্ময়কর প্রচ্ছন্ন প্রেরণা মোটামুটি অনুমান করতে শিখে মানুষ সম্বন্ধে বিস্ময়বোধ তার কমে গিয়েছে। ভুল বোঝা আর অর্থহীন অকারণ ছেলেমানুষী অভিমানের জন্য রামপালকে সে একটু তিরস্কার করল, কিন্তু এত পরিষ্কার করে তার ভুলটা বুঝিয়ে দিয়ে এমন বন্ধুর মত এটা সে করল যে রাগ করার বদলে নিজের অপদার্থতায় বিমর্ষ হয়ে গেল রামপাল । তার হয়ে ওকালতি করার পাগলামীর জন্য রম্ভার করতে লাগিলা লজ্জা, রামপালের সম্পর্কে আজ এই প্ৰথম ক্ষীণ একটু ংশয় জেগে মনটাও তার খারাপ হয়ে গেল খানিক । বেশী বড় কি ভেবেছে সে রামপালকে, সে যা নয় ? কৃষ্ণেন্দু নতুন একটা পরিচয় পাইয়ে দিল রামপালের ৷ এখনো ওকে চিনতে কি বাকী আছে। তবে ? রামপালকে উৎসাহ দেবার জন্য কৃষ্ণেন্দু তখন বলল, “দুঃখ কোরো না ভাই । তোমার যদি নিষ্ঠা থাকে, দরদ থাকে, ওরা নিজে থেকেই তোমায় একদিন মানবে। আজ তোমাকে ভুল বুঝেছে, কাল ভুল ভেঙ্গে যাবে। নিজেই ভেবে দ্যাখো, উমাবাবুকে মারতে দেওনি বলে সবাই রাগ করেছিল কিন্তু রাগ করলে কি হবে, মনে মনে তো সবাই টের পেয়েছিল কাজটা তুমি ঠিক করেছ, আপনা থেকে সকলে তাই তোমায় মেনে নিয়েছিল। কারো বলে দিতে হয়নি। ব্যাপারটা শুনে আমি বড় খুশী হয়েছি রামপাল তোমার প্রশংসা করেছি। ” শুনে রামপালের বিমৰ্ষভাব কেটে গেল ।রম্ভা মনে স্বস্তি পেল এবং দু’জনের চােখে চোখে তাকানো দেখে কৃষ্ণেদুর লাগিল চমক। ধীর স্থির শান্ত মানুষ সে, কত অভিজ্ঞতায় গড়া আবেগহীন বাস্তববোধ, হঠাৎ তীব্ৰ আলো লাগা চোখের মত মন কিনা তার ঝাকি খেয়ে অন্ধ হয়ে গেল। এদের ভালবাসার চাহনির ছোয়াতে । কয়েক মুহূৰ্ত্তের জন্য হলেও নিজের স্নায়ুমণ্ডলীতে এই আকস্মিক উত্তেজনা ঘটার ব্যাপারটা কৃষ্ণেন্দুর কাছে প্ৰথমে বড় দুৰ্বোধ্য মনে হল। এটা কোন ty