পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शान्मिक @छ्दछौ পরে সে ভালো করে ঘুমিয়ে পড়ার পর সোরগোলটা আরম্ভ হলে গোবর্ধন নিশ্চয় দাওয়া থেকে নিচে পড়ে যেতো । কুকুরের লড়াই। গজেনের খাবারের দোকানের সামনে দুটো কুকুর সর্বদা পড়ে থাকে-তিনকু আর ভুলি। বাস তারা করে গজেনের বাড়ীতেই, গজেন দোকান খুলতে এলে সঙ্গে আসে, আবার দোকান বন্ধ হলে গজেনের সঙ্গে ফিরে যায়। কেবল দোকানের ফেলনা ঘিয়ের খাবার খেয়েই বেঁচে থাকে না বলে দুজনের সব লোম খসে যায়নি, ঘন লোম একটু পাতলা হয়েছে আর দু’একটা ছোটখাট টাক পড়েছে। এখানে ওখানে। তিনিকুর চেহারা বেশ জমকালো, গম্ভীর গোমড়া મૂર, মাঝবয়সী জোয়ান মন্দ কুকুর। তার কাছে রোগা ছোটখাটাে ভুলিকে কেমন বেমানান দেখায়। বয়সে কিন্তু ভুলি তিনিকুর চেয়ে বড়ই হবে। তেজ কিন্তু তার কম নয়, মাঝে মাঝে তার দাতখিচুনিতেই তিনিকুকে বিনা প্ৰতিবাদে তফাতে সরে যেতে দেখা যায় । গত বছর পাঁচটি বাচ্চ হয়েছিল। শরীরটা ভালো ছিল না ভুলির, পাচটিকে বঁাচাতে পারবে না জেনে দুটিকে বেছে নিয়ে মাই না দিয়ে নিজেই সে মেরে ফেলেছিল। একটি খেয়েছিল শেয়ালে, একটি মরেছিল দুর্বোধ্য রোগে এবং অন্যটিকে চেয়ে নিয়ে নানু গলায় দড়ি বেঁধে টেনে টেনে বেড়িয়েই শেষ করে। দিয়েছিল। বর্ষা ঋতুর আসন্ন আবির্ভাব ওদের দুজনকেই একটু চেঞ্চল ও জীবন্ত করে তুলেছে। দোকানের সামনে চুপচাপ পড়ে থেকে সারাক্ষণ ওরা শুধু জিভ বার করে স্থাপায় না। খানিক আগেও গোবর্ধন ওদের ছুটোছুটি লাফালাফির খেলা দেখেছে, লড়ায়ের অভিনয়ে ভুলির আদরের কামড়ে তিনকুকে হার মেনে শূন্যে চার পা তুলে চিৎ হয়ে পড়তে দেখেছে। গোবর্ধনের কালোও যে বর্ষা ঋতুর তাগিদে বসন্ত-ব্যাকুল মানুষের মতো চঞ্চল হয়ে সঙ্গিনীর খোজে বেরিয়ে পড়বে, কে তা জানত! তিনিকুর সঙ্গে তার বেধেছে লড়াই এবং দুজনকে ঘিরে চারিদিকে পাক দিতে দিতে তীব্র তীক্ষ্ম কণ্ঠে চিৎকার জুড়েছে ভুলি। তিন দফা লড়ায়ের পর কালোকে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যেতে দেখে গোবর্ধনের মনটা বিগড়ে গেল। কালোর সম্বন্ধে সে একান্ত উদাসীন, তার আন্তাকুঁড়ে ঘেটে আর মাটির খেলায় গুণমতীর দেওয়া একমুঠো ভাত খেয়ে কালে বেঁচে থাকে উঠানের কঁঠাল গাছটার নিচে সারাদিন বিশ্রাম করে। রাত্রে হয়তো