পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাস সবে সে ধরিয়েছে, দুরে দেখা গেল বাসের আলো । বাসেরই আলো । মোটর গাড়ির আলো আরও নিচে থাকে । গোবর্ধন উঠে দাড়িয়ে কুমড়োটা তুলে নিল কঁধে আর নিবারণ গিয়ে দাঁড়াল তার জলভরা বালতির কাছে।। জগত চা-ভরা পাত্ৰটি উনানে তুলে দিল আর দোকানের ঘুমন্ত ছোকরাটাকে এক গাঁটায় জাগিয়ে দিল আধো কান্নায়। কয়েকটি মিট মিটে আলোজােলা স্তব্ধ ঘুমন্ত পুরী যেন মুহুর্তে সজাগ হয়ে উঠল। সন্ধ্যাবেলার মতো লোক নেই, বহুলোক চলে গেছে, কিন্তু অবশিষ্ট কয়েকজনের অতিরিক্ত উত্তেজনা সে অভাব পূরণ করে দিল । বাসের দৃষ্টিগোচর চোখের দিকে পিছন করে দাড়িয়ে শ্ৰীমন্তসহায় তখন অনিচ্ছক শ্রোতা গোবর্ধনকে বলছে, “গা থেকে বেরুতে পারি না, ऊांशे न द्रव्र এত জোর ! পাচ দিন আগে পৌছে দিয়ে যাবার কথা, আজও এল না। তাই না বলছিলাম মামাকে, আজকের বাসে এলো তো এলো, না এলে কাল তুমি গিয়ে । লিয়ে এসবে। তা মামা বলে, “উহু, সেটা নিয়ম নয়। মামাশ্বশুর একলাটি ভাগ্নে বেীকে লিয়ে এসবে কি করে, মামাশ্বশুরের ছায়া দেখতে নেই ভাগ্নে-বৌয়ের ? শুনিলি ? এমনি করে রসাতলে যাচ্ছে দেশটা ৷ একবারটি এসে লিক। কি করব জানিস ? একটা গোটা দিন রাত বৌ আর মামাটাকে এক ঘরে কুলুপ দিয়ে রেখে দেব ।” সর্বাঙ্গে আওয়াজ করতে করতে পুরানো বাস এসে দাঁড়াল। ক্ষুধার্ত যাত্রীরা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। চা ও খাবারের দোকানে। ড্রাইভার ঈশ্বর এবং ক্লিনার ও কণ্ডাক্টর পটল পৰ্যন্ত নেমে গেল চা খেতে । নিবারণ গাড়িতে জল দিতে গিয়েছে, ঈশ্বর চেচিয়ে বলল, “আরে ও নিবারণ, জল দিস নি।” নিবারণ বিস্মিত হল, প্ৰতিবাদ করল না। কাছে গিয়ে বলল, “চাল কটা দেন ঈশ্বরবাবু, ঘর গিয়ে দুটি রাধি ” “মোদের জন্যে রাধবি না ? ঈশ্বর নির্বিকার চিত্তে হাসল, 'না, তোর ঘরে আবার রুগী সব কটা। চাল কিন্তু মোটে দেড় সের মিলেছে ভাই ।” - মৃত্যুর নিমীলনের বদলে জীবনের বিস্ফোরণে দুচোখ প্ৰায় গোলাকার হল নিবারণের, সে বলল, “দেড় সেরা ?” “দাম চড়ে গেছে ভাই।” চায়ে চুমুক দিয়ে ঈশ্বর গলা নামােল, “বাবুকে বলেছি, 8 GQ A SR(e)