পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাস । দিয়ে আয় দিহিক পঞ্চ, । তোমাকে দেড়সের-আচ্ছা, দুসের চাল দেব গোবধান —কুমোড়োটার দাম।” ঈশ্বর মুচকে হেসে বলল, “আপনি মহৎ লোক মশায়, তাতে সন্দ নেই। ঠকিয়ে যারা প্ৰাণে মারছে তাদের ঠেয়ে দুটি চাল বাগিয়ে নিতে অভিমানে আপনার মরণ হয় ।” ধনেশ সাহা দ্বিধাগ্ৰস্তভাবে বলল, “কার কথা বলছ ? কে ঠকায় ? কারা প্ৰাণে মারছে শুনি ? জবাব না দিয়ে ঈশ্বর বাসটি রাস্তা থেকে সরিয়ে রাখতে গেল। ওষুধের দোকানের পাশে রাস্তার সঙ্গে সমতল খানিকটা জায়গা ছিল। পটল হাতল ঘুরিয়ে ষ্টার্ট দিয়ে সরে যেতেই ঈশ্বর বাস চালিয়ে দিল, পরীক্ষণে তীক্ষ্ম আর্তনাদে খড়পার আকাশ গেল চিবে। দুটি প্রাণীর আর্তনাদ । গোবধানের কালো একবার আর্তনাদ করেই সামনের চাকায় পিষে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে, পিছনের চাকায় লেগে ভুলির পিছনের দুটি পা ভেঙে গেছে। একটানা আর্তনাদ করতে করতে ভুলি সামনের পা দুটির সাহায্যে দেহটাকে কোনোমতে টেনে নিয়ে যেতে লাগিল জগতের দোকানের সামনে । গাড়িটা যথাস্থানে রেখে ঈশ্বর ফিরে এলে জগত তাকে কটু একটা গাল দিল । গোবধান প্ৰায় আর্তনাদ করেই বলল, “তোর কি চোখ নেই ? অরে আ খুনে ব্যাটা, তোকে কি চোখ দ্যায় নি ভগ মান!” ঈশ্বর কারো কথার জবাব দিল না, পটলকে ধরে আথালি পথালি মারতে আরম্ভ করল । ‘শৃয়ার বাচ্চা, চােখ নেই তোর ? বলতে পারলি নি মোকে ? ইঞ্জিন ঘেষে ওরা ছিল, মোব সেথ, নজর যায় ?” শ্ৰীমন্তসহায় ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলল, “রাখে। তোমাদের ঝগড়া। এটার কি করা যায়। কোলে করে গায়ে লিয়ে যাই ? ঈশ্বর বলল, “ও বঁাচবে না।” মন্ত সহায় হঠাৎ যেন কাবু হয়ে গেছে। ভিজে গলায় বলল, ‘তবু একটা দুটো দিন যা বাঁচবে—” বাসে ষ্টার্ট দেবার হাতলটাি নিয়ে ঈশ্বরকে এগিয়ে আসতে দেখে সে থেমে to S