পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ধরাই ভাল। মথুরবাবুর যদি দয়া হয়, যদি তিনি বুঝতে পারেন যে তার বোন খুন। হয়েছে বলে, দামিনীর ঘোষণার ফলে তার বােনের কাল্পনিক কেলেঙ্কারি নিয়ে চারিদিকে হৈ চৈ হচ্ছে বলে তাকে দোষী করা উচিত নয়, তা হলে মুস্কিল হতে পারে। ছুটি বাতিল করে কাল থেকে কাজে যাবার অনুমতি হয়তো তিনি দিয়ে বসবেন। এতক্ষণ খেয়াল হয়নি, এখন সে বুঝতে পেরেছে, নিয়মিতভাবে প্ৰতিদিন স্কুলে ছেলেদের পড়ানোর ক্ষমতা তার নেই। মথুরবাবুর সামনে গিয়ে দাড়াতে লজ্জা হচ্ছে। চেনা মানুষের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবার ভয়ে সে মাঠের পথ ধরে বাড়ী চলেছে। বাড়ী গিয়ে ঘরের মধ্যে লুকোতে হবে। দুর্বল শরীরটা বিছানায় লুটিয়ে দিয়ে ভারী মাথাটা বালিশে রাখতে হবে। সারা দুপুর ঘরের মধ্যে শুয়ে বসে ছটফট করে কাটিয়ে শেষবেলায় ধীরেন উঠানে বেরিয়ে এল। মাজ বাসন হাতে নিয়ে শান্তি ঘাট থেকে উঠে আসছিল। ডোবার ধারে প্রকাণ্ড বঁাশ-ঝাড়টার ছায়ার মানুষের মত কি যেন একটা নাড়াচাড়া করছে । ধীরেন আর্তনাদ করে উঠল, “কে ওখানে ? কে ?” শান্তির হাতের বাসন ঝন ঝন শব্দে পড়ে গেল। উটপাড়ি’ করে কাছে ছুটে এসে ভয়ার্ত কণ্ঠে সে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় কে ? কোনখানে ? বাশ-ঝাড় থেকে চেনা গলার আওয়াজ এল -“আমি মাষ্টারবাবু। বঁাশ কাটছি।” ‘কে তোকে বঁাশ কাটতে বলেছে ?” শান্তি বলল, “আমি বলেছি। ক্ষেন্তি পিসী বলল, নূতন একটা বঁাশ কেটে আগা মাথা একটু পুড়িয়ে ঘাটের পথে তাড়াতাড়ি ফেলে রাখতে। ভোরে উঠে সরিয়ে দেব, সন্ধ্যের আগে পেতে রাখব। তুমি যেন আবার ভুল করে বঁাশটা ডিঙ্গিয়ে যেও না ।” সন্ধ্যার আগেই শান্তি আজকাল রাধা বাড়া আর ঘরকন্নার সব কাজ শেষ করে রাখে। অন্ধকার ঘনিয়ে আসার পর ধীরেনকে সঙ্গে না নিয়ে বড় ঘরের চৌকাটি পার হয় না । ছেলেমেয়েদেরও ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। সন্ধ্যা থেকে ঘরে বন্দী হয়ে ধীরেন আকাশ পাতাল ভাবে আর মাঝে মাঝে সচেতন হয়ে ছেলে CACC vago CeCe 'ছোটপিসী ভূত হয়েছে।” R do