পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भांकि 6iहांदकी ছাড়া আর এর মধ্যে আর কোন বিস্ময়কর অসত্য নেই,-অতি সহজ কথা । এ যুগের চরম আর পরিণত দৃষ্টান্ত হিসাবে না ধরে সুধাকে ছোট কেটে যদি যুগের মৌলিক আর অপরিণত দৃষ্টান্তে দাঁড় করান হয়, তবু দেখা যাবে এই সুধার এভাবে মেয়ে হওয়ার মত সেই সুধাৱ অতি সামান্য রকম এভাবে মেয়ে হওয়ার জন্যই মানুষের দাত আর নখে বোমার রক্তপিপাসা জেগেছিল। নখের অ্যাচড় আর বােমার বিস্ফোরণের মধ্যে যে পার্থক্য নেই, এই ধারণা পোষণ করাই প্রত্যেকের উচিত। তা না হলে তুলনামূলক ঘোরপ্যাচের ফাঁদে পড়ে মানুষ তর্ক আর হাতাহাতি করে,-কোন সময় নখ দিয়ে অ্যাচড়ায় আর দাঁত দিয়ে কামড়ায়, কোন সময় এক ঝাক এরোপ্লেন পাঠিয়ে বোমা বৃষ্টি করায়। মন্দা একদিন সুধাকে বলল, “মা আজ বাড়ী থেকে, সন্ধেবোলা অনাদি আসবে। বাবাকে বলতে পারবে না, তোমায় বলবে। তুমি বাবাকে বোলো।” সুধা ভয়ানক চিন্তিত হয়ে বলল, ‘অনাদি ? তাই তো ।” মন্দার মুখ গভীর হল, চোখ বড় হল, দৃষ্টিতে তীব্রতা এল। ভীরু মাকে একটি আঙ্গুল দেখিয়ে বলল, “তুমি ভাবচ এখনো আমি কচি খুকীটি আছি, না ? কিছু বোঝে না, কেন ভেবে মর, কি দরকার তোমার এত ভাবনার ? কাল সন্ধেবেলা সমীর আসবে-আসতে বলেছি।” সুধার বয়স প্ৰায় পঞ্চাশে এসে ঠেকেছে, বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের জটিলতাগুলি সরল হতে আরম্ভ করায় ভয় পরিণত হয়েছে বুকের ধড়পড়ানিতে আর চালাকি পরিণত হয়েছে প্রায় নিবুদ্ধিতায়। কিছুই যেন সহজে বোধগম্য হয় না। গল্পের মাঝখানে আমার গল্প ব্যাখ্যা করার মত মন্দাকে তাই আবার ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে হয় । “আমি ওপরে থাকব। সমীর এলেই অনাদির কথাটা বলবে—বেশ হাসিমুখে বলবে, তোমাদের যেন মত আছে এমনিভাবে, বুঝলে ? তারপর সমীরকে ওপরে আমার ঘরে পাঠিয়ে দেবে বুঝলে ? সুধা কাতরকণ্ঠে বলল, “এসব তুই কি বলছিস মন্দা ? আজি অনাদি কাল সমীর- এসব কোন দেশী কাণ্ড ?” সুধার তখনকার মুখ দেখেই যে কোন বুদ্ধিমতীর রাগ করার কথা, তবু সুধার কথা শুনেই যেন হঠাৎ নিজের বিপন্ন অবস্থাটা খেয়াল করে মন্দা একেবারে ঝিমিয়ে গেল। গভীর মুখ মান হল, বড় চোখ স্তিমিত হল, দৃষ্টি ভিজে এল। কঁাদ কঁাদ” (RV)