পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ধরিয়া মনে মনে ক্ষুন্ন হইয়া থাকিবে, পারিলে তাহার জের কমলা সহজে মিটিতে দিবে না। কিন্তু ইহাদের অভিজ্ঞতা এমনি প্রচুর যে ভবিষ্যতের এই অতিরিক্ত দুৰ্গতির সম্ভাবনায় সন্দেহ করিবার সুযোগও পায় না। সুশীল থাক বা যাক, আজ হইতে দু’জনের সম্পর্ক আরও বৈচিত্র্যহীন আরও নীরস হইয়া উঠিবে, কমলা চট পরিয়া থাকিলে অনন্ত তাহা দেখিতে পাইবে না, অনন্তের কোন কথার মৃদুতম প্ৰতিবাদ করিতেও কমল ভুলিয়া যাইবে । কমলার চোখ জল জল করিতে লাগিল । একি জীবন । আনন্দের অভাব শুধু নয়, নিরানন্দের প্রাচুর্য ! অথচ কারণ খুজিয়া পাওয়া যায় না। ভুল অনন্ত অনেক করিয়াছে এবং তাহার মধ্যে অনেকগুলি ভুল নিন্দনীয়, কিন্তু পরমাত্মীয়ের ক্রটি বিচূতি ক্ষমা করিতে- তো খুব বেশী উদারতার প্রয়োজন হয় না ? কেন সে তা পারে না ? তা ছাড়া এ তো ক্ষতি, নিজেকে অধিকতর বঞ্চিত করা । চুরুটা ছুড়িয়া ফেলিয়া অনন্ত বলিল, সময় সময় তোমার মুখের দিকে চেযে আমি লজ্জা পাই কমল । cन gड डांशांति लस्की । তা বটে ! কতদিন আমরা পরস্পরের কাছে লজ্জিত হয়ে আছি ? কমলা বলিল, মনে নেই । মনে না থাকা আশ্চর্য কিন্তু অসঙ্গত নয়। অনন্ত আর কিছু বলিল না। লঘুপদে ঘরে ঢুকিল মাধুরী। কোলে তার বছর দেড়েকের একটি রুগ্ন শিশু । শিশুটি ক্ষীণস্বরে র্কাদিতেছিল । কমলার দিকে খোকাকে বাড়াইয়া দিয়া মাধুরী বলিল, গিয়ে গেকে কঁদিছে। বাপমার কাছে এক ঘণ্টা ছেলে থাকতে চায় না। একি লজ্জা বলুন ত ? বলিয়া সে সকৌতুকে হাসিল । সে হাসিতে লজ্জার চিহ্নও ছিল না। কমলাই চোখ তুলিয়া তাহার দিকে চাহিতে পারিল না, খোকাকে কোলে নিয়া অপরাধীর মত বলিল, সুশীল বাবুকি বললেন ? মাধুরী হাসিল, কি আর বলবে? সখি মিটে বিরক্ত হয়ে উঠল। কথাতো শুনবে না। সকাল থেকে বলছি, কি হবে খোকাকে এনে ? থাকবে তোমার কাছে খোকা ? তা কেবলি বলতে লাগল, নিয়েই এসে না একবার খোকাকে, দুদিন যে ওকে আমি দেখিনি। অসুখ হলে ওর ন্যাকামি যেন বেড়ে যায়। কমলা নীরবে জানালায় গিয়া দাড়াইল । Gt 8R