পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाषेिक @छादब्जँगै তিনটা সিড়ি ভাঙ্গিলে একেবারে সুশীলের শয়নকক্ষে পৌছানো যায়। সুশীল শুল্কমুখে বিছানায় বসিয়াছিল! একটু নি:শব্দ হাসি দিয়া সে কমলাকে অভ্যর্থনা করিল। খোকাকে নিয়ে এলাম । তা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ওটাকে ফেলে এলেই ভাল করতেন । ওকে দেখলে জীবনে আমার যত ক্ষতি হয়ে গেছে সব একসঙ্গে মনে পড়ে । , কমলা চমকাইয়া উঠিল। জীবনে যার বোধ হয় সবটাই ক্ষতি, জীবনের সমস্ত ক্ষতির কথা তার একসঙ্গে মনে পড়া কি ভয়ঙ্কর । \ সজল চােখে সে বলিল, আপনার কাছে মাপ চাইতেও আমার লজ্জা করে। জানেন, সব দেখে শুনে দিন দিন আমার স্নেহ মমতা পৰ্যন্ত শুকিয়ে উঠেছে। আপনার ছেলে আপনাকে ফিরিয়ে দিতে পারলে আমি বঁাচতাম । খোকাকে সে বিছানায় নামাইয়া দিল । ক্ষীণ শিশুটি যেন ক্রমেই তার অপরাধের মত অসহ ভারি হইয়া উঠিতেছিল। কমলা টুলটাতে বসিলে সুশীল বলিল, আপনাকে বলাই ভাল। খোকার জন্য আমার কোন নালিশ নেই। কমলা সংশয় ভরে বলিল, কেন ? আপনার মধ্যে ও যে আমার আপনি হয়ে রইল। এই আমার পরম লাভ । না, কোন কিছুর জন্যই আমার নালিশ নেই। কমলা নীরব হইয়া রহিল। নালিশ নাই ! বালিশের তলা হইতে একটি ক্ষুদ্র ছিটের জামার যে অংশটুকু বাহির হইয়া আছে সে যেন সেটা চেনে না, তাকে আসিতে দেখিয়া সুশীল যে জামাটি বালিশের নীচে লুকাইয়াছিল এ যেন সে অনুমান করিতে পারে না ! কি ভাবে তাকে সুশীল ? কমলার মনে হইল, এ তার শাস্তি। স্ত্রী-পুত্র বঁচিয়া থাকিতে শূন্য ঘরে শূন্য মনে এর দিন কাটে, ঘরের বিশৃঙ্খলতায়, ঘরের দেয়ালে দেয়ালে, ওই মলিন শূন্য শয্যায়, বিষাদের প্রলেপ পড়িয়াছে। এ ঘরে এ ভাবে বসিয়া থাকার বাড়া শাস্তি আর কি হইতে পারে মানুষের ? অপরাধই বা তার কম কি ? কিছুই তো তার অজানা নাই। প্ৰতিকার প্ৰথম হইতেই সুশীলের আয়ত্তে ছিল ! যেদিন খুশী ওই রঙচটা তেরঙ্গে জামা কাপড় ভরিয়া স্ত্রীর হাত ধরিয়া বিদায় নিলে কে তার পথ আটকাইত ? এ বিপদ (3V)