পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Íቑ] না, বিষাদ ও বেদনার মধ্যে ক্রমে ক্ৰমে তাহার সৃষ্টি হয়। নিজের দুর্বলতার অপরাধটা ধীরে ধীরে নন্দর ঘাড়ে চাপাইয়া দিয়া তাহার উপর একটু বিতৃষ্ণাও সে বোধ করে। নন্দর পরিহাসে আর সে রাগ করেন, নীরবে উপেক্ষা করিয়া যায়, পরিহাসম্পূহও নন্দর সুতরাং আপনা হইতেই কমিয়া আসে। “জেনে শুনে যত দোষ করেছি। সব তুমি ক্ষমা করেছ সুমতি। না জেনে এমন কি দোষ করলাম-” সুমতি কিছুমাত্র মমতা বোধ করে না। ইহাকে আবার ভাব জমাইবার হীন প্ৰচেষ্টা মনে করিয়া তাহার গা জ্বলিয়া যায়, রুক্ষ সুরে সে বলে “আপনার কোন অসুবিধা হচ্ছে কি ? নন্দর মন সরল সে তথাপি হাল্কা সুরে বলে “আমার শত্রুর অসুবিধা হচ্ছে । তবে খাওয়ার সময়ে তুমি উপস্থিত থাক না বলে অসুবিধাই বল দুঃখই বল একটু श्Çछ ।' “আমার সময় হয় না ।” শেষ পর্যন্ত নন্দ রাগিয়া উঠে, বিশ্ৰী কথা বলে ; “ভালই, ভালই। আমি শুধু কম্পাউণ্ডার যে!" ইহার একটা কড়া জবাব নন্দ প্ৰত্যাশা করে কিন্তু সুমতি নীরবে আপনার কাজ করিয়া যায়, সে রাগ করিয়াছে কিনা তাহা পর্যন্ত নন্দ অনুমান করিতে পারে না । ইহার পর সেও সাবধান হইয়া যায়, হাসি খুশী কম করিয়া গম্ভীর হইয়া থাকে। সুমতিকে জানাইয়া দেয়-“তোমার জন্য নয়, সীতার অসুখ করেছে।” সুমতি বুঝিয়াও না বোঝার ভান করিয়া বলে, “কিসের ? কি বলছেন ?? ‘আমি যে আজকাল গম্ভীর হয়ে থাকি তার কথা বলছি। তোমার জন্য নয়।” সুমতি ভাবে, বঁচিয়া গেলাম। ভাবে, ভগবানের অনেক দয়া তাই মনের গায়েও একটা কালির আঁচড় পড়া নিবারণ করা গেল । আহিকে বসিয়া সে যেন আবার ভুলিয়া যাওয়া স্বামীকে স্পষ্ট স্মরণ করিতে পারে। জীবন যেন জীবনের সীমা ছড়াইয়া আলো ও আনন্দ ভরা একটি অভিনব স্বৰ্গে উঠিয়া যায়। নন্দ নিজের ঘরে বসিয়া রাত জাগিয়া মনিঅৰ্ডারের রসিদ গোণে আর সীতাকে চিঠি লেখে। লেখে (፩ (፩ ዓ