পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाषेिक @iहादर्लेलौ ডুকিতে গিয়া সুমতি শুনিয়াছিল তাহার শরীর ভাল নয়, সে খাইবে না। শরীরের কি হইয়াছে জিজ্ঞাসা করিয়া জবাব মেলে নাই। অথচ কোথায় যে তাহার অপরাধ সুমতি ভাবিয়া পাইতেছিল না । তাহার বয়স তেইশ, সে যুবতী সে সুন্দরী তাহার স্বামী নাই ইহা যদি সকলে তাহার অপরাধ বলিয়া গণ্য করিয়া থাকে, এবার তাহার। মরাই ভাল। কিন্তু কিছুই তো সে করে নাই ! প্ৰাণপণে পারিপাশ্বিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখিয়া চলিবার চেষ্টার কবে তাহার ক্রটি ঘটিয়াছে ? তাহাকে নিয়া নন্দর অনধিকার চর্চায় শুধু ততটুকু রাগই সে করিয়াছে যতটুকু রাগ না হইলে মানায় না, সে রাগের CG可 টানিয়া চলিবার চেষ্টাও সে করে নাই। সকলের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক সহজ ও সাধারণ করিয়া রাখিতে সারাদিন ব্যাপৃত থাকিয়াছে। অথচ ইহাদের কল্যাণে জীবন তাহার আজ অযথা জটিলতায় ভরা। সব বিষয়ে সেই হইয়া উঠিতেছে অপরাধী । সীতার দুর্ভাগ্য উপলক্ষ্যে ষাট টাকার কম্পাউণ্ডারি করাই যে নন্দ জীবনের চরম লক্ষ্য করিয়া রাখিয়াছে সে অপরাধ তাঁহারই। এক সাহেবের প্রকাণ্ড ওষুধের দোকানো একশ দশ টাকার চাকরীট যে নন্দ পছন্দ করিল না সে জন্য সুমতি ভিন্ন আর কেহ দোষী নয়। স্বাস্থ্য যে নন্দর ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে সে দায়িত্বও সুমতির । অলকা যে বঁচিল না, মরিয়াও স্বামীর দু’ফোটা চোখের জলের তর্পণ পাইল না, এ জন্য স্বয়ং ভগবানও হয়ত একদিন সুমতিরই বিচার করিবেন। এমনি সব কটু চিন্তায় সুমতি ব্যাপৃত ছিল, ও ঘর হইতে অক্ষয় তাহাকে আহবান করিল। অনুযোগ করিয়া বলিল “এক এক দুপুরটা যে কাটেনা সুমতি ৷” সুমতি মৃদুস্বরে বলিল “খোকাকে রেখে যাব ? “খোকার সঙ্গে এক তরফা আলাপ করব কতক্ষণ ? তাছাড়া দুপুর বেলা আর রাত্রিটা তোমার কোল দখল করে থাকা ওর অভ্যাস, আমার কাছে কঁদিবে।’ সুমতি নতিমুখে বলিল ‘কিন্তু দুপুরে একটু না শুয়ে যে আমি পারব না। কাল একাদশী করেছি।” অক্ষয় ব্যস্ত হইয়া বলিল ‘ও, আচ্ছা, তবে তুমি যাও সুমতি, শোবে যাও। কাল তোমার একাদশী গেছে জানতাম না। তুমি বুঝি নির্জলা একাদশী করা ? সুমতি নীরবে স্বীকার করিল। অক্ষয়ের আর কিছু বলিবার আছে কিনা at V2R